দূরের পথ পাড়ি দিচ্ছেন এমন সময়ে হঠাৎ গাড়ির ব্যাটারি বন্ধ হয়ে গেল, গাড়ি আর চলছে না। আশেপাশে কোন গাড়ি সার্ভিসিং সেন্টার বা পেট্রল পাম্প ও নেই, যে সেখানে গিয়ে ঠিক করাবেন। মহা বিপদে পড়ে গেলেন আপনি। গাড়ি ঠিক করে সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারলে যদি আপনার কোন ধরণের ক্ষতির সম্ভবনা থাকলে তো আপনার শনির দশা পোয়া বারো। কিন্তু কথায় বলে, বড় বড় সমস্যার সমাধান নাকি খুব ছোট ছোট হয়। ঠিক সেরকমই, গাড়ির ব্যাটারি নিয়ে মহাবিপদের সমাধান হিসেবে কিছু ছোট ছোট ট্রিক্স মনে রাখলেই সহজেই বিপদ এবং বিড়ম্বনা দুটোই এড়ানো সম্ভব।
এসপিরিন দিয়ে চালু করুন বন্ধ ব্যাটারি
এ্যাসপিরিন তো মোটামুটি সকলেই চেনেন। অনেকে সব সময় নিজের কাছেও রাখেন যাতে তাৎক্ষনিক মাথাব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। মাথাব্যথার ঔষধ হিসেবে বহুল পরিচিত এই ট্যাবলেট, মাথাজনিত ব্যথা তো কমাবেই; পথের মধ্যে হুট করে আপনার গাড়ির ব্যাটারি বন্ধ হয়ে গেলে, সেই মাথা ব্যথাও কমাবে। গাড়ি চলতে চলতে দেখলেন গাড়ির ব্যাটারি ডাউন। আশেপাশে এমন কেউ বা কিছু নেই যে আপনাকে সাহায্য করবে। এভাবে হঠাত ব্যাটারি ডাউন হয়ে গেলে, আশেপাশের ফার্মেসি থেকে দুটো এ্যাসপিরিন কিনে ব্যাটারির মধ্যে ছেড়ে দিন। এ্যাসপিরিনের মধ্যে যে এসিটিলাইট থাকে, তা ব্যাটারির সালফিউরিক এসিডের সাথে মিশে অল্প চার্জ উৎপন্ন করতে সাহায্য করবে। তবে বেশিদূর নয়, গাড়ি স্টার্ট নিলে সাথে সাথে নিকটস্থ সার্ভিসিং স্টেশনে চলে যান।
এপসম লবনে চলবে ব্যাটারি
আপনার গাড়ির ব্যাটারি কি এমন ভাবে শব্দ করছে যে এটি আর চলবে না? ভাবছেন এর পরের বার গাড়ি চালু করতে গেলে ব্যাটারি আর কাজ করবে না? এমন অবস্থায় গাড়ির ব্যাটারিকে আর একটু সজীব করতে, এক আউন্সের মতো এপসম লবন গরম পানিতে মিশিতে গাড়ির ব্যাটারির প্রতিটি সেলের মধ্যে দিয়ে দিন। এই দ্রবণ গাড়ির ব্যাটারিতে ইলেক্ট্রলাইট সঞ্চালন হবে। ফলে ব্যটারিও চলবে।
পথের মাঝে গাড়ি থেমে গেলে, সহজে তাৎক্ষনিক কী ব্যবস্থা নেবেন তা তো জানা গেল। এবার আরো কিছু সহজ ট্রিকস জানা যাক, যেগুলো জানলে মাঝপথে গাড়ির ব্যাটারি ডাউন হয়ে যাওয়ার ঝামেলা কমে যাবে।
খাবার সোডা দিয়ে ব্যাটারি টার্মিনালের মরিচা রোধ
গাড়ির ব্যাটারি টার্মিনালে মরিচা ধরেছে? মরিচার কারণে অনেক সময় ব্যাটারির কানেকশন লুজ হয়ে যায়। কখনোবা ব্যাটারি দ্রুত শেষ হয় এমন কি কোন কোন ক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক স্পার্ক থেকে দুর্ঘটনাও ঘটে যেতে পারে। প্রথমে একটি ব্রাশ দিয়ে ভালভাবে ঘষে পরিষ্কার করুন। এরপর তিন টেবিল চামচ খাবার সোডার সাথে এক টেবিল চামুচ গরম পানি মিশিয়ে মিক্সার তৈরি করে, এই মিক্সার দিয়ে আবার ব্রাশ করুন. এরপর একটি তোয়ালে দিয়ে ভালভাবে মুছে ফেলুন। পরবর্তীতে মরিচা রোধের জন্য অন্য একটি কাপড়ে একটু পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে টারমিনালের মাথা গুলো মুছে ফেলুন।
সোডা/কোল্ড ড্রিংক্স দিয়ে ব্যাটারি পরিষ্কার
খাবার সোডার পাশাপাশি, পানীয় সোডাও গাড়ির ব্যাটারি টার্মিনালের মরিচা রোধ করতে সাহায্য করে। পানীয় সোডার মধ্যে যে কার্নিবক এসিড থাকে তা এই মরিচা রোধ করতে সাহায্য করে। কিন্তু কোথায় পাবেন এই সোডা? বাজারে পাওয়া যায় এমন সব কার্বনেটেড কোল্ড ড্রিংক্সের মধ্যেই এই সোডা থাকে। তাই, মরিচার কারণে ব্যাটারি ডাউন হলে তাতে কিছু কোমল পানীয় ঢেলে দিন এবং শুকনা কাপড় দিয়ে ভালভাবে মুছে ফেলুন।
পেট্রোলিয়াম জেলি ভাল রাখবে গাড়ির ব্যাটারি
শীতকালে ত্বক ভাল রাখতে আমরা কমবেশি সবাই পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করে থাকি। শীতকালে ত্বকের সমস্যা তো হয়’ই পাশাপাশি আপনার গাড়ির ব্যাটারিরও নানা সমস্যা দেখা দেয়। শীতকালে ইলেকট্রিক্যাল রেজিস্টেন্স এবং ইঞ্জিন অয়েল ঘন হয়ে যায়। ফলে কাজ করার জন্য গাড়ির ব্যাটারিকে আরো বেশি শক্তি ব্যয় করা দরকার হয়। অনেক সময় ব্যাটারির টার্মিনালে মরিচা পড়ে। শীতকালে এইসব সমস্যা সমাধান করে দিতে পারে পেট্রোলিয়াম জেলি। শীতকাল পুরোপুরি আসবার আগে গাড়ির ব্যাটারি পরীক্ষা করুন। টার্মিনাল ডিসকানেক্ট করে আবার কানেক্ট করুন এবং সংযোগস্থলে পেট্রোলিয়াম জেলি মাখিয়ে রাখুন। নিশ্চিন্ত থাকুন পুরো শীতকাল।