যাদের গাড়ি আছে, ইঞ্জিন নিয়ে তাদের সবাই কম বেশী উদ্বিগ্ন থাকেন। ইঞ্জিন ঠিকমত সার্ভিস করা, অনেকদিন ব্যবহার করা এবং ইঞ্জিনের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি করা সবকিছু নিয়েই সারাক্ষণ নিশ্চই চিন্তায় থাকতে হয় আপনাকে। গাড়ির প্রয়োজনীয় ও অত্যাবশ্যকীয় পার্টস হিসেবে ইঞ্জিন আপনার গাড়িতে একটি বড় জায়গা নিয়ে থাকে। ইঞ্জিনের খুঁটিনাটি জানা থাকলে অবশ্য অনেক সিদ্ধান্ত সাথে সাথেই নিয়ে ফেলা যায়। অনেকে জানেন যে রুটিন চেক যেমন- তেল পাল্টানো, ট্র্যান্সমিশন সার্ভিস ইত্যাদি ইঞ্জিনের আয়ুষ্কাল বাড়ায় কিন্তু কিছু সময়ে গাড়ি চালানোর অভ্যাস পাল্টে ফেললেও জ্বালানি খরচ কমানোর সাথ সাথে ইঞ্জিনের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি পেতে পারে। কিন্তু যারা নতুন গাড়ি চালাতে শুরু করেছেন বা করবেন চিন্তা করছেন তাদের জন্য দেয়া হলো ইঞ্জিনের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধিতে কিছু অব্যার্থ টিপস –
নমনীয়ভাবে ব্রেক করুন
গাড়ি নতুন কেনার পর অনেকেই খুব বেশী আগ্রহ নিয়ে রাস্তায় বের হন। আর অনেক কিছু একসাথেই করে ফেলতে চান। নতুন গাড়ি নিয়ে সবাই খুব বেশী খুশী হয়ে অনেকটা হার্ড ব্রেক করে ফেলেন। নতুন ইঞ্জিনের নতুন পার্টস থাকে আর এগুলো ইঞ্জিনের সিলিন্ডারের উপযোগী হয়ে উঠতে একটু সময়ের প্রয়োজন পরে। খুব শক্ত ব্রেক করলে বা খুব বেশী জোড়ে গাড়ি চালানো কোন কাজের কথা না। খুব জোড়ে ব্রেক করে কিছু সময় ভালো হলেও মনে রাখবেন একটি সুস্থ্য ইঞ্জিন এক লাখ মাইল অর্থাৎ এক লক্ষ্য ষাট হাজার নয়শ চৌত্রিশ কিলোমিটার অথবা দুই লাখ মাইল চলতে পারে।
শীতের দিনে গরম হওয়ার সময় দিন
শীতের সকালে ঘুম থেকে উঠে আপনি সবার আগে কোন কাজটি করেন। অবশ্যই ভালমত গরম কাপড় পড়েন তারপর অন্য কাজে লেগে যান। তেমনি শীতের দিনে গাড়িকে একটু গরম হওয়ার সময় দিন। শীতের দিনে গাড়ির ইঞ্জিনের স্টার্ট নিতে দ্বিগুণ বেশী চাপ নিতে হয়। কারণ শীতের দিনে গাড়ির ব্যাটারি থাকে ডাউন। আর তেল সব থাকে জমে , শক্ত হয়ে। কাজেই শীতের দিনে গাড়িকে আগে গরম হতে সময় দিন। অনেক সময় ময়লা , খারাপ মাইলেজ আর ধোঁয়া বের হওয়ার জায়গায় যদি খুব বেশী সমস্যা থাকে তাহলে গাড়িকে কিছুক্ষনের জন্য ইঞ্জিন স্টার্ট দিয়ে ৩০ সেকেন্ড বা এক মিনিট রাখা উচিৎ।
খুব বেশী গতিতে গাড়ি চালাবেন না
খুব বেশী গতিতে গাড়ি চালালে শুধু ইঞ্জিনের ক্ষতি হয়না জ্বালানি খরচ বেশী হয়, ধোঁয়া বেশী নির্গমন হয় আর সাথে সাথে দুর্ঘটনার কারণ বৃদ্ধি পায়। অতিরিক্ত গতি আপনার গাড়িকে দ্রুত চলতে ইঞ্জিনকে অনেক বেশী চাপ দেয়। এতে আপনার গাড়ি থেকে জ্বালানি বেশী খরচ হয়। গাড়ি চালানোর আদর্শ গতি হচ্ছে ৫০ , খুব বেশী হলে ৫৫ মাইল প্রতি ঘণ্টা। গাড়ির ইঞ্জিনের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধিতে অবশ্যই গতি কমিয়ে চালাবেন। গতি কমান , জীবন বাঁচান সাথে শখের গাড়িটিরও।
সঠিকভাবে গিয়ার শিফট করুন
যারা ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন শিফটে গাড়ি চালান তাদের জন্য মূলত এই টিপস। কিন্তু আপনার গাড়ি যদি অটোম্যাটিক ট্রান্সমিশনে চলে তাহলে অবশ্য কোন অসুবিধা হবার কথা না তখন আপনার গাড়ির শিফট নিজে নিজে শিফট পাল্টে নিতে পারবে। কিন্তু আপনার গাড়িকে সঠিক শিফট গিয়ারে রাখাটা জরুরী। নতুন ট্রান্সমিশনে সাধারণত চালককে নির্দিষ্ট ইলেকট্রোনিক্যাল গিয়ারে চলতে নির্দেশ দেয়। যেমনটা দেয় ট্রিপট্রনিক বা ডুয়াল ক্লাচ গিয়ারে করা যায়।
ওভারলোড থেকে বিরত থাকুন
সাধারনভাবে যে ট্রাক বা লরিগুলো বানানো হয় মালপত্র বহনের জন্য সেগুলো শুধু মালপত্র বহনের ক্ষেত্রেই ঠিক আছে। ট্রাক বা বড় মাপের ইঞ্জিনও অনেক বেশী কর্মক্ষমতা সম্পন্ন হয়ে থাকে। কিন্তু ছোট গাড়ি বা প্রাইভেট গাড়ির ইঞ্জিনও আকারে ছোট হয় আর অতিরিক্ত মালপত্র বহনের সময় ইঞ্জিনের অনেক ক্ষতি করে ফেলে। তাই আপনার প্রাইভেট কারের ইঞ্জিনের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধিতে খেয়াল রাখবেন মালপত্র যেন অনেক বেশী না হয়। অনেকে আছেন একটি গাড়ি নষ্ট হলে আরেকটি গাড়ি দিয়ে বেঁধে টানার চেষ্টা করে থাকেন । এসব করলে আপনার গাড়ির তো বারোটা বাজবেই সাথে গাড়ির ইঞ্জিনেরও বারোটা বাজবে।
ইঞ্জিনের যত্ন নিলে ইঞ্জিনের আয়ুষ্কাল বাড়বে আর আপনার গাড়ি চালানোর সময় অনেক অসুবিধা কমে যাবে। ইঞ্জিন সম্পর্কে যাবতীয় খুঁটিনাটি জানতে চোখ রাখুন প্রহরীর ফেসবুক পেজ আর ওয়েবসাইটে । গাড়িতে ইন্সটল করুন প্রহরী , গাড়িকে রাখুন নিরাপদে আপনি থাকুন নিশ্চিন্তে। প্রায় ২০টির বেশী ফিচার নিয়ে প্রহরী আপনাকে দেবে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা।