কখনো ভেবে দেখেছেন, এতো যন্ত্রপাতিতে ভর্তি একটি গাড়ি রাস্তায় কোন খুটুরখাটুর বা ঘষাঘষির শব্দ ছাড়াই এতো মসৃণ ভাবে চলে কীভাবে? এই জাদুর পেছনের কারিগর কিন্তু ইঞ্জিন অয়েল। একজন মানুষের শরীরের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কার্যকলাপ ঠিকমতো চলতে যেমন শরীরে পর্যাপ্ত রক্তের প্রয়োজন। ঠিক তেমনি একটি গাড়ির ভেতরটা ঠিকঠাক রাখতে প্রয়োজন ইঞ্জিন অয়েলের। ইঞ্জিনের ঘর্ষণ কমানো থেকে শুরু করে ইঞ্জিন ঠান্ডা কিংবা দূষণ দূর, একটি গাড়ির পার্ফরমেন্সের পেছনে অদৃশ্য নায়ক হচ্ছে ভালো মানের ইঞ্জিন অয়েল। ইঞ্জিন অয়েলের কাজ কি এবং এর কাজ কি তা সম্পর্কে জানব আজকের ব্লগটিতে।
ইঞ্জিন অয়েল কি?
ইঞ্জিন অয়েল, যা মোটর অয়েল নামেও বহুল পরিচিত। গাড়ির ইঞ্জিনের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ লুব্রিকেন্ট হিসেবে ব্যবহার হওয়া এটির প্রাথমিক কাজ মূলত ইঞ্জিন ও অভ্যন্তরীণ চলন্ত যন্ত্রাংশের ঘর্ষণ প্রতিরোধ করা। এই অয়েলে সাধারণত বেস অয়েলের সাথে সংরক্ষনকারী উপাদান হিসেবে বিশেষ ধরনের এডিটিভ থাকে, যা যন্ত্রাংশের মরিচা রোধ করে। অয়েল সমানভাবে ছড়িয়ে যাওয়ার জন্য ডিসপার্সেন্ট উপাদান, দূষন দূর ও ইঞ্জিন ঠান্ডা রাখতে ডিটার্জেন্ট ইত্যাদিও এতে উপস্থিত থাকে। ইঞ্জিনের বিভিন্ন অংশের মধ্যে ফাকা জায়গা সিল করে গাড়ির পার্ফরমেন্স বজায় রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এই অয়েলের।
ইঞ্জিন অয়েলের কাজ কি?
ইঞ্জিন অয়েল হল যেকোনো যানবাহনের একটি অপরিহার্য উপাদান, যা ইঞ্জিনের সঠিক কার্যকারিতা নিশ্চিত করে। এটি ইঞ্জিনের বিভিন্ন অংশের মধ্যে ঘর্ষণ কমাতে সাহায্য করে, ফলে যান্ত্রিক ক্ষয় রোধ হয় এবং ইঞ্জিনের দীর্ঘস্থায়ীতা বাড়ে। এছাড়াও, এই তেল তাপ অপচয়, ময়লা এবং দূষণ উপাদানগুলি পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে, যা ইঞ্জিনের কর্মক্ষমতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক সময়ে এই অয়েল পরিবর্তন করা ইঞ্জিনের স্বাস্থ্য এবং দক্ষতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসুন জেনে নেই এক নজরে এটির কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত-
১. লুব্রিকেন্ট হিসেবে
ইঞ্জিন অয়েলের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হচ্ছে গাড়ির ইঞ্জিনের ভেতরকার চলন্ত অংশগুলোকে লুব্রিকেট করে ঘর্ষণ কমানো ও ক্ষয় রোধ করা। অনেক যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ একসাথে কাজ করার সময় একে অপরের খুব কাছাকাছি বা ছোয়ায় আসে। এই অয়েল এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা ইঞ্জিনের অভ্যন্তরীণ এসব ধাতব যন্ত্রপাতিকে একসাথে কাজ করার সময় একে অপরের সাথে ঘষা না খেয়ে মসৃণভাবে পিছলে যেতে সাহায্য করে।
২. ইঞ্জিন ঠান্ডা করতে
চলন্ত অবস্থায় ইঞ্জিনের ভেতরকার যন্ত্রপাতির কর্মযজ্ঞের ফলাফল হিসেবে তাপ উৎপন্ন হয়।এই অয়েল এই তাপ কমিয়ে ইঞ্জিনকে অতিরিক্ত গরম হওয়া থেকে রোধ করে। গরম যন্ত্রপাতি থেকে তাপ পরিবহন করে ইঞ্জিন অয়েল কুলারের দিকে নিয়ে যায়। যার ফলে তাপ নিরাপদে ছড়িয়ে গিয়ে ইঞ্জিনকে ঠান্ডা রাখে।
৩. ইঞ্জিনকে পরিস্কার রাখতে
সময় ও ব্যবহারের সাথে ইঞ্জিনের ভেতর ময়লা ও অবশেষ জমা হতে পারে। ইঞ্জিন অয়েলের একটি উপাদান ডিটারজেন্ট। যা ইঞ্জিনের ভেতর ময়লা ও দূষণ দূর করে এবং গাদ তৈরি হতে বাধা দেয়। ইঞ্জিনের মসৃণতা ও গাড়ির উন্নত পার্ফরমেন্সের জন্য ইঞ্জিনের পরিচ্ছন্নতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৪. ক্ষয় ও মরিচা রোধ
পরিবর্তনশীল আবহাওয়া ও ইঞ্জিনের ভেতরের আর্দ্রতার জন্য ইঞ্জিনের অংশগুলো মরিচা ধরার ঝুঁকিতে থাকে। এই ঝুঁকি কমাতেও ভূমিকা রয়েছে ইঞ্জিন অয়েলের। ইঞ্জিনের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন যন্ত্রাংশে এই অয়েল এক ধরনের প্রতিরক্ষামূলক স্তর তৈরি করে। যা তাদের ক্ষয় ও মরিচা থেকে সুরক্ষা দেয়।
৫. জ্বালানী দক্ষতা বৃদ্ধিতে
ইঞ্জিনের উন্নত কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে ভালো লুব্রিকেটেড ইঞ্জিনের বিকল্প নেই। একটি গাড়ির ইঞ্জিন যত ভালো থাকবে সেই গাড়ি ততই মসৃণভাবে চলবে, পারফরম্যান্সও থাকবে ভালো। এতে করে অতিরিক্ত জ্বালানী খরচের বোঝাও টানতে হয় না গাড়ির মালিককে। অর্থাৎ, গাড়িতে ভালো মানের ইঞ্জিন অয়েলের ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতি গ্যালন জ্বালানিতে পাওয়া যাবে বেশি মাইলেজ। সাশ্রয় হবে গাড়ির পেছনে অতিরিক্ত খরচ।
৬. ফাকা জায়গা সিল করে
ইঞ্জিনের ভেতর বিভিন্ন যন্ত্রপাতির মধ্যে জোড়া ও ফাকা জায়গা থাকে। যার মধ্যে পিস্টন রিং এবং সিলিন্ডারের দেয়ালের মধ্যে বিশেষ কিছু ফাকা অংশ থাকে। এইসব ফাকা জায়গা সিল করতে সাহায্য করে এই তেল। যার ফলে গাড়ির ইঞ্জিনের ভেতর দহন তাপের অপচয় রোধ হয়। অর্থাৎ, একটি গাড়ির ইঞ্জিন অয়েল সেই গাড়ির সর্বাধিক পাওয়ার আউটপুট পাওয়াও নিশ্চিত করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
৭. শব্দ দূষণ কমায়
চলন্ত গাড়িতে এতো যন্ত্রপাতি সম্বলিত ইঞ্জিন চললে সেখান থেকে যান্ত্রিক বিভিন্ন শব্দ বাইরে আসা খুব স্বাভাবিক ছিলো। কিন্তু ওইসব বিদঘুটে যান্ত্রিক শব্দ আমাদের কান পর্যন্ত আসতে না পারার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে ইঞ্জিন অয়েলের। ইঞ্জিন ও অভ্যন্তরীণ যন্ত্রপাতিকে তৈলাক্ত বা লুব্রিকেটেড রাখার মাধ্যমে ইঞ্জিন থেকে উৎপাদিত শব্দ হ্রাস করে ইঞ্জিন অয়েল। যাত্রা হয় শব্দহীন আরামদায়ক।
গাড়ির ইঞ্জিন অয়েল কত রকমের হয়?
সাধারণত গাড়ি ও প্রয়োজনীয়তার রকমভেদে চার ধরনের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার হয়ে থাকে। জেনে নেই ইঞ্জিন অয়েলের প্রকারভেদ সম্পর্কে।
১. মিনারেল বা কনভেনশনাল ইঞ্জিন অয়েল
এই ইঞ্জিন অয়েল সরাসরি ভূগর্ভস্থ খনিজ থেকে প্রাপ্ত এবং অপরিশোধিত। প্রাকৃতিক এই তেলের সাথে এডিটিভ পদার্থ ও ডিটারজেন্ট মিশিয়ে কনভেনশনাল ইঞ্জিন অয়েল হিসেবে বাজারজাত করা হয়। নিয়মিত ও দৈনন্দিন ব্যবহার্য গাড়িতে সাধারণত কনভেনশনাল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার হয়। এছাড়াও পুরনো ইঞ্জিন ও হাই মাইলেজের গাড়ির জন্যও এটি উপযুক্ত।
২. সিন্থেটিক ইঞ্জিন অয়েল
ভূগর্ভস্থ খনিজ তেলকে পরীক্ষাগারে পরিশোধন করে বিভিন্ন রাসায়নিক যৌগ মিশ্রিত করে সিন্থেটিক অয়েল হিসেবে বাজারজাত করা হয়। প্রচলিত ইঞ্জিন অয়েলের চেয়ে অনেক বেশি কর্মক্ষমতা ও লুব্রিকেশন দিতে পারে এই ইঞ্জিন অয়েল। প্রতিকূল আবহাওয়া ও তাপমাত্রায় গাড়ির পার্ফরমেন্সে ঠিক রাখতে ও ইঞ্জিনকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য উপযুক্ত হচ্ছে সিন্থেটিক ইঞ্জিন অয়েল।
৩. হাই মাইলেজ ইঞ্জিন অয়েল
৭৫০০০ মাইলের বেশি চলা গাড়ির জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি হাই মাইলেজ ইঞ্জিন অয়েল। যা অতিরিক্ত তেল খরচ হ্রাস, তেলের লিকেজ ও নির্গমন রোধ করতে সাহায্য করে। এতে থাকা এডিটিভ পদার্থের পরিমান তেলের খরচ কমায় ও পুরনো দূর্বল ইঞ্জিনকে অতিরিক্ত সুরক্ষা দেয়। 10W-30 বা 10W-40 সান্দ্রতা সম্পন্ন এই ইঞ্জিন অয়েলের বিশেষ সুরক্ষায় ইঞ্জিনের আয়ুও বাড়ে।
৪. সিন্থেটিক ব্লেন্ড ইঞ্জিন অয়েল
এটিকে সেমি সিন্থেটিক ইঞ্জিন অয়েলও বলা হয়ে থাকে। ভূগর্ভস্থ খনিজ তেলের সাথে সিন্থেটিক অয়েল মিশিয়ে এই সিন্থেটিক ব্লেন্ড ইঞ্জিন অয়েল তৈরী করানহয়। গাড়ির পার্ফরমেন্সের ও জ্বালানি খরচের ভারসাম্য রক্ষা করতে সিন্থেটিক ব্লেন্ড ইঞ্জিন অয়েল সর্বাধিক উপযুক্ত। উচ্চ তাপমাত্রাতে এই ইঞ্জিন অয়েল খুবই কার্যকরী। দামি সিন্থেটিক ইঞ্জিন অয়েল না কিনেই সিন্থেটিক অয়েলের মতো পার্ফরমেন্স যারা চান, তাদের কাছে বেশ জনপ্রিয় এই ইঞ্জিন অয়েলটি।
ইঞ্জিন অয়েল কখন বদলানো জরুরী?
গাড়ির ইঞ্জিনের মান বজায় রাখার জন্য নিয়ম করে নির্দিষ্ট সময় পর পর ইঞ্জিন তেল বদল করা অপরিহার্য। সাধারণত একটি গাড়ি ৩০০০ থেকে ৫০০০ মাইল চলার পরে ইঞ্জিনের তেল পরিবর্তন করে ফেলা জরুরী। তবে গাড়ি তৈরীর সময়কাল, গাড়ির মডেল, গাড়ি ব্যবহারের ধারাবাহিকতা এবং ব্যবহৃত তেলের ধরন ও মানের উপর এই গতানুগতিক সময়কালের পরিবর্তন হতে পারে। নির্দিষ্ট কোন মডেলের গাড়ির জন্য ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তনের বিশেষ কোন আলাদা নির্দেশনা আছে কি না জানতে, সেই গাড়ির ম্যানুয়েল অনুসরণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ইঞ্জিন অয়েল গ্রেড কী?
গাড়ির ইঞ্জিন অয়েল গ্রেড বলতে ইঞ্জিন অয়েলের সান্দ্রতা (Viscosity) ও পার্ফরমেন্সের উপর ভিত্তি করে করা শ্রেণিবিভাগকে বোঝায়। সান্দ্রতা মানে হলো তেলের প্রবাহের প্রতিরোধ ক্ষমতা। এই সান্দ্রতাকে ইংরেজি অক্ষর ডব্লিউ (W) একটি সংখ্যা দ্বারা প্রকাশ করা হয়। যেমন, 5W-30। ডব্লিউ অক্ষরটি নেয়া হয়েছে ইংরেজি শব্দ উইন্টার (Winter) থেকে। এখানে ডব্লিউ এর সাথে যুক্ত সংখ্যাটি দিয়ে বোঝায় নিম্ন তাপমাত্রায় ইঞ্জিন অয়েলের সান্দ্রতার পরিমাণ। আর অন্য সংখ্যাটি দিয়ে বোঝায় উচ্চ তাপমাত্রায় ইঞ্জিন অয়েলের সান্দ্রতা। ইঞ্জিন অয়েলের তৈলাক্তকরণ বা লুব্রিকেশনের ক্ষমতা ইঞ্জিন অয়েল গ্রেডের উপর অনেকটা নির্ভরশীল। ভিন্ন ভিন্ন তাপমাত্রা ও পরিস্থিতিতে ইঞ্জিন অয়েলের কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে অয়েল গ্রেড সম্পর্কে জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
উপযুক্ত ইঞ্জিন অয়েল চেনার উপায়
গাড়ির জন্য উপযুক্ত মানের ইঞ্জিন অয়েল নির্বাচন করতে কয়েকটি বৈশিষ্ট্য জেনে রাখা জরুরী।
১. সান্দ্রতার মান
কোন ইঞ্জিন অয়েল একটি গাড়ির ইঞ্জিনকে কত বেশি তৈলাক্ত করবে, কতটা সুরক্ষা দিবে ইঞ্জিনের ভেতরকার যন্ত্রপাতিকে, তা অনেকটাই নির্ভর করে এই অয়েলের সান্দ্রতার মানের উপর। বিভিন্ন তাপমাত্রায় তেলের প্রবাহের ক্ষমতাকেও নিয়ন্ত্রণ করে সান্দ্রতার মান। যা বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে জরুরী। খুব বেশি ঘন ইঞ্জিন অয়েল ইঞ্জিনের ঠান্ডা অবস্থায় ঠিকমতো প্রবাহিত হবে না। আবার ইঞ্জিন গরম অবস্থায় খুব বেশি পাতলা এই অয়েল পর্যাপ্ত সুরক্ষা দিতে পারবে না। তাই গাড়ির ম্যানুয়েলে উল্লেখিত সান্দ্রতার প্রয়োজনীয় মাত্রা নিশ্চিত হয়ে গাড়ির জন্য এই তেল নির্বাচন করতে হবে।
২. API সার্টিফিকেশন
ইঞ্জিন অয়েল কেনার আগে আমেরিকান পেটোলিয়াম ইন্সটিটিউট (API) থেকে “স্টারবাস্ট” এবং “ডোনাট” চিহ্ন দেখে নিতে হবে। কারন এই API সার্টিফিকেশন নিশ্চিত করে যে, আন্তর্জাতিকভাবে নির্ধারিত পার্ফরমেন্স ও কোয়ালিটি মেনে এই অয়েলটি বাজারজাত করা হয়েছে। API সার্টিফিকেট পেতে এই অয়েলের স্যাম্পলকে বেশ কিছু কঠিন পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। যার ফলাফল হিসেবে API প্রত্যয়িত ইঞ্জিন অয়েল একটি গাড়ির ইঞ্জিনকে সুরক্ষিত, দীর্ঘস্থায়ী, মসৃণ ও কর্মক্ষম রাখার নিশ্চয়তা দেয়।
৩. এডিটিভ পদার্থের উপস্থিতি
উচ্চ মানের ইঞ্জিন অয়েলে এডিটিভ জাতীয় পদার্থের উপস্থিতি থাকে। যা ইঞ্জিনের অভ্যন্তরে আঠালো কাদার মতো ময়লা জমতে বাধা দেয়। গাড়ির ইঞ্জিনের সুরক্ষা ও পার্ফরমেন্সে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এডিটিভ পদার্থের। ঘর্ষণ থেকে ক্ষয় রোধ করা ছাড়াও ইঞ্জিন অয়েলের সান্দ্রতার মান ধরে রাখতেও সাহায্য করে ইঞ্জিন অয়েলে উপস্থিত এডিটিভ পদার্থ। এডিটিভ মিশ্রিত না থাকলে গাড়ির ইঞ্জিনকে দীর্ঘস্থায়ী করতে সেই ইঞ্জিন অয়েল এতোটাও কার্যকরী হবে না।
৪. ব্র্যান্ড
শখের গাড়িটির ইঞ্জিনের সর্বাধিক যত্ন নিশ্চিত করতে ব্র্যান্ডেড ইঞ্জিন অয়েল নির্বাচন করা জরুরী। নামি-দামি ও পরিচিত একটি ব্র্যান্ড বাজারে তাদের সুনাম বজায় রাখার জন্য সবসময় তৎপর থাকে। যার ফলে ভালো ব্র্যান্ডের ইঞ্জিন অয়েল থেকে গাড়ির কোন ক্ষতির সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। তাই গাড়ির অভ্যন্তরীণ ক্ষয়ক্ষতি প্রতিরোধ করতে কমদামী নিম্নমানের ইঞ্জিন অয়েল না কিনে খ্যাতি সম্পন্ন ভালো ব্র্যান্ড থেকে কেনা উচিত।
৫. সিন্থেটিক বনাম কনভেনশনাল
সিন্থেটিক ও কনভেনশনাল এই অয়েলের মধ্যে যে কোন একটা নির্বাচন করার সুযোগ থাকলে সিন্থেটিক ইঞ্জিন অয়েলই ব্যবহার করা উচিত। কারন, প্রতিকূল আবহাওয়াতে এটি কনভেনশনাল ইঞ্জিন অয়েল থেকে অধিক সুরক্ষা দিতে পারে।
শেষ কথা
একটি গাড়ির দীর্ঘায়ু ও ভালো পারফরম্যান্স অক্ষুণ্ণ রাখতে এই অয়েলের সঠিক ব্যবহার খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই শখের গাড়িটি ও এর ইঞ্জিনকে সুস্থ রাখতে চাইলে, গাড়ির সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের সাথে গাড়ির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভালো মানের ইঞ্জিন অয়েলের ব্যবহার ও নিয়মিত অয়েল পরিবর্তন নিশ্চিত করতে হবে।