প্রহরী

সঠিক সময়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানোর টিপস
পড়তে লাগবে: 3 মিনিট

সঠিক সময়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানোর টিপস!

গন্তব্যে দ্রুততম সময়ে পৌঁছানো সবারই অন্যতম লক্ষ্য হলেও বেশকিছু বিষয় মাথায় না রেখে আমরা বেরিয়ে পড়ার কারণে আমরা আমাদের কাঙ্খিত গন্তব্যে যথাসময় তো দূরের কথা অনেক বেশি দেরী করে ফেলি। ফলে আমাদের পরিকল্পনার অনেক কিছুই ভেস্তে যায়। সঠিক পরিকল্পনা এবং বেশকিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে আমরা চাইলেই আমাদের গন্তব্যে দ্রুততম সময়ে পৌঁছে যেতে পারি খুব সহজেই।

গন্তব্যে দ্রুততম সময়ে কিভাবে পৌঁছাবেন?

আজকের আলোচনায় আমরা মূলত এমন কিছু কার্যকরী টিপস আপনাদের সাথে শেয়ার করবো যা অনুসরণ করে আপনি দ্রুততম সময়ে পৌঁছে যেতে পারবেন আপনার কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে। তবে চলুন জেনে নেয়া যাক গন্তব্যে দ্রুততম সময়ে পৌঁছে যাওয়ার কিছু সিক্রেট টিপসঃ

১। কোথায় যাবেন

আপনার গন্তব্য কোথায় সেটা অবশ্যই ইতোমধ্যে ঠিক করে ফেলেছেন। তবে যদি গন্তব্য পরিবর্তনীয় হয় তবে খুব ভেবেচিন্তে আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি এমুহূর্তে কোথায় যেতে চান।

যদি একই সাথে আপনার দুটো জায়গায় যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় তবে আপনি কোন গন্তব্য থেকে দ্রুত সময়ে ফিরে আসতে পারবেন সেটাকে প্রাধান্য দিবেন। তাছাড়া আপনার জার্নি করার সময়টা কখন এবং সে সময়ে সড়কে যান চলাচলের মাত্রা কেমন, যানজটের সৃষ্টি হতে পারে কিনা সে বিষয়গুলোর উপর ভিত্তি করে আপনাকে স্থান নির্বাচন করতে হবে।

২। কখন যাবেন

ধরুন, আপনি ঠিক করেছেন ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাবেন। এখন আপনার বাসা যদি হয় উত্তরা তবে আপনি উত্তরা থেকে দিনের বেলা কাঁচপুর আসতে আসতেই কক্সবাজার যাওয়ার আনন্দ মিটে যাবে।

আবার আপনি যদি কুয়াকাটা যেতে চান তবে আপনি দিনে না গিয়ে রাতের লঞ্চে ঘুমিয়ে চলে যেতে পারবেন। সকালে উঠে দেখবেন আপনি কুয়াকাটা পৌঁছে গেছেন প্রায়। তাই আপনি কখন রওয়ান দিবেন মানে কখন যাবেন সেটা খুব ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই জার্নি করার পরিকল্পনার জায়গাটাতেই সকলে ভুল করে তাই কখন যাবেন সেটা খুব ভেবে সিদ্ধান্ত নিয়েই রওয়ানা করতে হবে।

৩। কিভাবে যাবেন

আপনি যেখানে যাবেন বলে সিদ্ধান্ত স্থির করেছেন সেখানে যাওয়ার জন্য অনেকগুলো পদ্ধতি আপনি চাইলে অবলম্বন করতে পারেন। যেমন ধরুন, বাসে যাবেন নাকি ট্রেনে, বিমানে না লঞ্চে, সকালে যাবেন নাকি রাতে। আপনি আসলে কিভাবে যেতে চান সেটার উপরে অনেকাংশেই নির্ভর করবে গন্তব্যে দ্রুততম সময়ে পৌঁছানোর কৌশল। তাই নিজের বাজেটের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নিন কোন মাধ্যমে আপনি দ্রুত পৌঁছাতে চান।

৪। অর্থ নাকি সময়

পৃথিবীতে মূলত দু’ধরণের মানুষের বসবাস। এক শ্রেণির অর্থ আছে সময় নাই এবং অপর শ্রেণির পর্যাপ্ত সময় আছে কিন্তু অর্থ নাই। আপনার নিঃসন্দেহে অর্থ আছে কিন্তু সময় নাই। তাই আপনাকে আসলে সময়ের কথা চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

যেভাবে হলে আপনার সময় রক্ষা পাবে এবং সময় মতো পৌঁছাতে পারবেন সেটার উপরই আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাই যখনি আপনি কোথাও দ্রুততম সময়ে পৌঁছাতে চাইবেন, তখন খুব ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিবেন কোন মাধ্যমে আপনার দ্রুত পৌঁছানো সম্ভব হবে। যেমন- ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যদি আপনি বাসে যান তবে কমপক্ষে ০৭ ঘণ্টা সময় লাগবে আপনার। আর যদি আপনি ফ্লাইটে যান তবে আপনার সময় লাগবে বড়োজোর আধাঘণ্টা। তাই সিদ্ধান্ত আপনার সময় না অর্থ কোনটাকে প্রাধান্য দিবেন।

৫। সকালে না রাতে

জার্নির সঠিক সময় মূলত দুইটি। সকাল এবং রাত। আপনি যদি রাতে জার্নি করেন তবে সেটা সবচেয়ে ভালো কেননা ঘুমিয়েই জার্নির ধকল অনেকটা কাটিয়ে উঠা যায়। তবে চাইলেই রাতে জার্নি করাটা নিরাপদ না। রাতের গাড়িতে ড্রাইভার ঘুমিয়ে গেলে এক্সিডেন্ট হওয়ার ভয় আছে, যদিও বিষয়টা হাস্যকর শোনাচ্ছে তবে ভয়ের কিছু নেই এমন ঘটনা তেমন ঘটে না। তবে রাতে ডাকাতের কবলে পড়ার ভয় আছে। তাই আপনি ভ্রমণ করতে চাইলে রাতে রওয়ানা করবেন নাকি খুব ভোরে সেটা ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিন।

গাড়ির ক্ষেত্রে প্রস্তুতি

যদি নিজের ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে ভ্রমণ করতে চান তবে গাড়ির ক্ষেত্রে কিছু প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে জার্নি শুরু করার আগেই। চলুন সেই প্রস্তুতিগুলোও জেনে নেই অল্প কথায়…………………

গাড়ির ইঞ্জিন অয়েল চেকঃ দূরবর্তী জার্নিতে গাড়ির ইঞ্জিন অয়েল চেক করা গুরুত্বপূর্ণ। না হয় মাঝপথে গাড়ি বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অত্যধিক।

চাকার প্রেসার চেকঃ দ্রুতসময়ে পৌঁছাতে হলে চাকায় নির্দিষ্ট পরিমাণে প্রেসার থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। সেটা অবশ্যই আগে থেকে চেক করে মাত্রা অনুযায়ী হাওয়া নিশ্চিত করে নিতে হবে।

গাড়িতে পর্যাপ্ত জ্বালানী নিশ্চিতঃ জার্নিতে পর্যাপ্ত জ্বালানী নিশ্চিত করতে হবে। এমন হওয়াটা স্বাভাবিক যে রাস্তায় আপনি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সে রাস্তায় যদি আপনার গাড়ির জ্বালানী ফুরিয়ে যায় তবে জ্বালানি পাবেন না, তখন বিপাকে পড়তে হবে।

গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাথে রাখাটা অত্যন্ত আবশ্যক একটি বিষয়। হয়রানি ব্যতিত দ্রুততম সময়ে কাঙ্খিত গন্তব্যে পৌঁছাতে সঠিক কাগজপত্র সাথে রাখার বিকল্প নেই।

ড্রাইভারের পর্যাপ্ত ঘুম এবং সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতঃ গন্তব্যে দ্রুততম সময়ে পৌঁছাতে হলে ড্রাইভারের সুস্বাস্থ্য অতীব জরুরি বিষয়। জার্নি শুরু করার আগে ড্রাইভারের পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করাটা খুবই দরকারী। রাস্তায় অধিকাংশ দূর্ঘটনা ঘটার পেছনে ড্রাইভারের অসুস্থতা কিংবা ঘুম চোখে গাড়ি চালানো অনেক বেশি দায়ী।

হোমমেড খাবার সাথে রাখা

জার্নিতে আমাদের ক্ষুধা অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি লাগাটা স্বাভাবিক। তাছাড়া রাস্তার পাশে গাড়ি দাঁড় করিয়ে খাবার খাওয়াটা অনেক বেশি সময় এবং খরচ সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই জার্নির প্রস্তুতিতে এবং কাঙ্খিত গন্তব্যে দ্রুত সময়ে পৌঁছানোর লক্ষ্যে সাথে রাখুন হোমমেড খাবার। কী কী হোমমেইড খাবার সাথে রাখতে পারেন তা নিয়ে বিস্তারিত জানতে পড়তে পারেন লং জার্নিতে যেসব খাবার সাথে রাখতে পারেন এই লিংকে।

বাকি সদস্যদের কথা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নেয়া- যদি এমন হয় আপনার সাথে বাচ্চা কিংবা বয়স্ক কেউ জার্নি করছে তবে তাদের সুস্থতার কথা মাথায় রেখে আপনাকে কিছু বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। যেমন ধরুন, তাদের জন্য অ্যাসিডিটি এবং বমির ওষুধ সাথে রাখা, গাড়িতে পর্যাপ্ত আলো, বাতাস কিংবা এসির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা। তাদের খাবারের বিষয়টিও আপনাকে মাথায় রাখতে হবে খুব সচেতনভাবে।

শেষকথা

এইতো এখন আপনি জেনে নিলেন আপনার গন্তব্যে দ্রুততম সময়ে পৌঁছানোর সহজ উপায় সমূহ। যাক।আপনার গন্তব্য যেখানেই হোক,সময় এবং প্রস্তুতি নিয়ে আপনার বের হওয়া চাই। গাড়ি ব্যবহার করে দূরে কোথাও গেলে উপরে বর্ণিত বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখবেন। আপনার ভ্রমণ এবং যাত্রাপথ শুভ হোক।

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    Share your vote!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top