গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করার চেষ্টা করা উচিত। আপনার হাতের স্টিয়ারিংয়ের উপর নির্ভর করে অনেক মানুষের প্রাণ। সেক্ষেত্রে নিজের এবং অন্যদের কথা চিন্তা করে নিয়ম মেনে সতর্কতার সাথে গাড়ি চালাতে হবে। আর দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য ভালভাবে ড্রাইভিং শেখাটাও অনেক বেশি জরুরী। আপনারা যারা গাড়ি ড্রাইভ করেন, তারা সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করে ড্রাইভিং স্কিল বাড়াতে পারেন। তো গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে কিছু দিক-নির্দেশনা দেখে নিতে পারেন, যা আপনার দক্ষতাকে আরও বেশি সমৃদ্ধ করবে।
ফোকাস ঠিক রাখুন
সবসময় আপনার আশেপাশে সবদিক খেয়াল করে মনোযোগের সাথে গাড়ি চালাতে হবে। মিররের দিকে বিশেষ নজর রেখে চলতে হবে। আবাসিক এলাকাগুলোতে শিশুরা হুটহাট করে রাস্তায় চলে আসতে পারে। সেজন্য এসময় ফোকাস ঠিক রেখে সচেতনভাবে ড্রাইভিং করতে হবে। এছাড়াও অন্য গাড়ির ড্রাইভাররা কি করতে যাচ্ছেন, তা খেয়াল করতে হবে। সবক্ষেত্রে দৃষ্টি রেখে নিরাপদে ড্রাইভিং করার চেষ্টা করতে হবে। মূলত পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝে সবদিক ভালভাবে বিবেচনায় নিয়ে, গাড়ি ড্রাইভ করাই একজন দক্ষ ড্রাইভারের দক্ষতার বহিঃপ্রকাশ।
অন্য গাড়িকে সাইড দিন
ড্রাইভিংয়ের সময় অন্য গাড়িকে পাশ করতে দেয়া উচিত। যদিওবা সে যদি স্পিড লিমিটের চেয়েও জোরে গাড়ি চালাচ্ছে, তথাপিও তাকে সাইড দিয়ে যাবার জায়গা করে দিলেই ভাল হয়। কারণ তার সাথে তাল মিলিয়ে যদি স্পিড রেস করা হয়, তাহলে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা অনেক বেশি বেড়ে যাবে। তাই এক্ষেত্রে কোন ধরণের প্রতিযোগিতায় না যাওয়াই উচিত। এছাড়াও সঠিক সময়ে টার্ন সিগন্যাল ইউজ করা দরকার। অন্য ড্রাইভারদের ইঙ্গিত দিতে হবে যে, আপনি গাড়ি টার্ন করবেন, এর ফলে তারা আগে থেকেই সতর্ক হবেন। তবে রেড লাইট সিগন্যালের সময় টার্ন করা উচিত নয়। এবং ইন্টারসেকশনের মাঝে কখনো লেন পরিবর্তন করবেন না।
ট্র্যাফিক রুলস মেনে চলুন
আমাদের সবারই সবসময় ট্র্যাফিক আইন মেনে চলা উচিত। গাড়ি চালানোর সময় তো আরও বেশি ভালভাবে তা মেনে চলা উচিত। এতে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে না। গাড়ি চালানোর সময় যদি ট্র্যাফিক পুলিশ থামতে বলেন, তবে তখনি থেমে যেতে হবে। তাদের সাথে ভালো আচরণ করতে হবে এবং ট্র্যাফিক রুলসগুলো ভালভাবে জেনে নিতে হবে। সেক্ষেত্রে হলুদ লাইট দেখলে থেমে যেতে চেষ্টা করবেন। কারণ আশেপাশের সবাই রেড লাইট আসার সাথে সাথেই আপনাকে থামা অবস্থায় দেখার আশা করবে।
গাড়ির স্পীড নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন
গাড়ি চালানোর সময় সদা সতর্ক হয়ে সবদিক খেয়াল করা উচিত। গাড়ির স্পিড নিয়ন্ত্রণে রেখে মনোযোগী হয়ে গাড়ি চালাতে হবে। কারণ স্পীড নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে, অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। আর তাই আপনার গাড়ির স্পীড লিমিট সম্পর্কে জানতে ভিটিএস প্রযুক্তির সাহায্য নিতে পারেন। এক্ষেত্রে প্রহরী ভিটিএসের ওভার স্পীড ভায়োলেশন ফিচারটির মাধ্যমে, আপনার বেঁধে দেওয়া স্পীডের থেকে বেশি গতিতে গাড়ি চললেই খুব সহজে মুঠোফোনে তা জেনে যাবেন।
নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন
সবসময় অন্য গাড়ি থেকে কিছুটা দূরত্ব রেখে ড্রাইভিং করলে ভাল হয়। আপনার এবং সামনের ড্রাইভারের মধ্যে একটা নির্দিষ্ট দুরুত্ব রেখে ড্রাইভিং করবেন। সময়ের হিসেবে এটা দুই থেকে চার সেকেন্ড হওয়া উচিত। এতে হঠাৎ করে ব্রেক করলে গাড়ি থামানোর জন্য যথেষ্ট সময় হাতে পাবেন। নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে ড্রাইভিং করলে, অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়ানো যায়। অনেকসময় দেখা যায় হাইওয়েতে গাড়ি খুব বেশি স্পীডে চলে। আর ক্ষেত্র বিশেষে ট্রাকগুলো বেশ বেপরোয়া চলে এবং আরেকটা সমস্যা হচ্ছে দ্রুত ট্রাক থামানোটা একটু কঠিনও বটে। আর তাইতো আশেপাশে ট্র্যাক থাকলে যথেষ্ট নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে চেষ্টা করুন।
পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝে শুনে চলুন
একজন ভাল দক্ষ গাড়ি চালক হতে হলে নিজের মধ্যে মানবীয় গুণাবলীর বিকাশ ঘটাতে হবে। মাথা ঠাণ্ডা রেখে সব ধরণের প্রতিকূল পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। যেকোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতেও অন্য ড্রাইভারদের সাথে রাগারাগি না করে বরং ভাল আচরণ করার চেষ্টা করা উচিত। অন্যদের প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাবোধ বজায় রেখে চলতে হবে। অনেকসময় অনেক বয়স্ক মানুষ গাড়ি চালান, সেক্ষেত্রে তাদের প্রতি যথেষ্ট ভদ্রতা বজায় রাখা আবশ্যক। একজন গাড়ি চালক হয়তো তার গন্তব্য স্থল টার্গেট করেই গাড়ি চালায়। তবে একজন দক্ষ চালক তার আশেপাশের ড্রাইভারদের রিঅ্যাকশন, পরিবেশ-পরিস্থিতি সবকিছুই পর্যবেক্ষণ করে বুঝে শুনে গাড়ি চালান।
সাবধানে গাড়ি পার্ক করুন
চারপাশের সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে নিরাপদ জায়গায় গাড়ি পার্ক করতে হবে। সেক্ষেত্রে গাড়ি পার্ক করার সময় যাতে অন্যদের কোন অসুবিধা না হয়, তা খেয়াল রাখুন। পার্ক করার সময় যেন যানজট বাধিয়ে না ফেলেন কিংবা পথচারীদের কোন অসুবিধা সৃষ্টি না হয়, সেদিকেও লক্ষ্য রাখা দরকার। এছাড়াও গাড়ি পার্ক করার সময় সতর্ক থাকতে হবে, যাতে অন্য কোন গাড়িতে ধাক্কা লেগে না যায়। মূলত গাড়ি থামানোর সময় আশেপাশে এবং রোডের দিকে খেয়াল রাখতে হবে, যাতে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত এক্সিডেন্ট না ঘটে।
গাড়ি চালানোর সময় একটা বিষয় মাথায় রাখা উচিত, তা হলো আপনার ড্রাইভিংয়ের উপর অনেক মানুষের জীবন নির্ভর করছে। আর প্রতিটি জীবনই অনেক অনেক বেশি মূল্যবান। আর এই অসীম অমূল্য জীবন যাতে ধ্বংসের মুখোমুখি না হয়, সেজন্য আপনাকে অবশ্যই সবদিক খেয়াল রেখে গাড়ি চালাতে হবে। ড্রাইভিংয়ের ক্ষেত্রে সব ধরণের প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলো অর্জন করে, মনোযোগের সাথে সতর্কভাবে গাড়ি চালান। আশা করা যায়, তাহলেই আপনার পথচলা হবে নির্ভার এবং নিরাপদময়।