দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ভেইকেল ট্র্যাকিং সিস্টেম হিসেবে প্রহরী বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র ভিটিএস সার্ভিস। দেশি প্রযুক্তি ও যন্ত্রাংশের সাথে আন্তর্জাতিকভাবে ব্যবহৃত জিপিএস প্রযুক্তির সমন্বয়ে প্রহরী গ্রাহককে আমরা ভিটিএস সেবা দিয়ে থাকি। কিন্তু আপনি হয়ত জানেন না, কীভাবে জিপিএস বা গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম কে কাজে লাগিয়ে গাড়ি ট্র্যাক করা হয়। আপনাদের জানার সুবিধার্থেই, ভেইকেল ট্র্যাকিং সিস্টেমের পুরো কার্যপ্রণালী তুলে ধরা হচ্ছে।
কীভাবে জিপিএস ভেইকেল ট্র্যাকিং সিস্টেম কাজ করে?
গাড়ি ট্র্যাক করার অনেক ধরণের উপায় এবং প্রযুক্তি থাকলেও সবচাইতে জনপ্রিয় প্রযুক্তি হচ্ছে জিপিএস বা গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম। এই গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম সর্বপ্রথম আমেরিকান সামরিক বাহিনী কর্তৃক উদ্ভাবিত এবং প্রয়োগ করা হয়েছিল। স্যাটেলাইট রেডিও নেভিগেশন ব্যবহার করে এই প্রযুক্তির উন্নতি সাধন করেছিল তারা। গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেমের অন্তর্ভুক্ত মোট ৩২টি স্যাটেলাইট মাইক্রোওয়েভ সিগন্যাল প্রেরণের মাধ্যমে কাজ করে। এই সিগন্যালগুলো পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠে জিপিএস রিসিভারে সিগন্যাল পাঠায়। এই স্যাটেলাইটগুলো পৃথিবীর চতুর্দিকে বিরামহীনভাবে ঘুরতে থাকে। এবং পৃথিবীতে মাইক্রোওয়েভ সিগন্যাল প্রেরণের মাধ্যমে জিপিএস রিসিভারের অবস্থান নির্ণয় করে থাকে।
ভূপৃষ্ঠের জিপিএস রিসিভারে একটি এন্টেনা থাকে। এন্টেনাটি স্যাটেলাইট কর্তৃক প্রেরিত মাইক্রোওয়েভ সিগন্যালের ফ্রিকোয়েন্সির সাথে মিল রেখে টিউন করা থাকে, ফলে একটি নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সিতে স্যাটেলাইট এবং জিপিএস রিসিভারের মধ্যে সিগন্যালের মাধ্যমে তথ্য আদানপ্রদান হয়ে থাকে। ভূপৃষ্ঠের জিপিএস রিসিভার একই সময়ে, পৃথিবীর চারপাশে ঘুরতে থাকা মোট চারটি স্যাটেলাইট থেকে সিগন্যাল গ্রহণ করে থাকে এবং রিসিভারের অবস্থান সম্পর্কে সামগ্রিক তথ্য প্রেরণ করে থাকে। তারপর এটি এর অবস্থানের পাশাপাশি গাড়ির ইঞ্জিন অবস্থা, গতি, ফুয়েল সম্পর্কিত তথ্য একত্রিত করে প্রহরী ভেইকেল ট্র্যাকার সার্ভিস প্রোভাইডারকে প্রেরণ করে। এই তথ্য প্রেরণ করতে ব্যবহার করা হয় মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি।
এজন্য ভেইকেল ট্র্যাকিং সার্ভিসের মাধ্যমে গাড়ি ট্র্যাক করার জন্য যেই ডিভাইস ব্যবহার করা হয় সেই ডিভাইসে একটি জিপিএস রিসিভার সেট করা থাকে। জিপিএস রিসিভারটি স্যাটেলাইট তথা গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেমকে কাজে লাগিয়ে গাড়ির অবস্থান এবং অন্যান্য তথ্য একত্রিত করে সাথে সাথে মোবাইল নেটয়ার্ক টাওয়ারের মাধ্যমে গ্রাহকের মোবাইলে পাঠিয়ে দেয়। অথবা কখনো কখনো রিসিভারের মধ্যে তথ্য সংগ্রহ করে রাখা হয়ে এবং পরবর্তীতে গ্রাহককে পাঠিয়ে দেয়।
জিপিএস ট্র্যাকার গাড়ি সম্পর্কিত যেসব তথ্য সংগ্রহ করে তা আপনার মোবাইলের ব্যবহৃত মোবাইল নেটয়ার্কের সার্ভারের গচ্ছিত করে রাখে। আপনি যখন প্রহরী অ্যাপ বা ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে গাড়ির খবর জানার জন্য গাড়ি ট্র্যাক করেন তখন মোবাইল নেটয়ার্কের সার্ভার থেকে আপনার গাড়ির সমস্ত তথ্য আপনাকে দিয়ে থাকে প্রহরী।
জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে গাড়ির কোন কোন তথ্য জানা যেতে পারে?
গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম দিয়ে বেসিক পর্যায়ে গাড়ির অবস্থান, গতি এবং দিক জানা গেলেও প্রযুক্তির আরো বেশি উন্নতির ফলে আরো অনেক গাড়ি সম্পর্কিত তথ্য জানা যায়।
একটি ভাল মানের ভেইকেল ট্র্যাকিং সিস্টেম এর চাইতেও বেশি ফিচার দিয়ে থাকে। যেমন ইঞ্জিনের অবস্থা, ফুয়েল মনিটরিং, গাড়ির দরজা খোলা বা বন্ধ হবার সময়,দূর থেকে ইঞ্জিন বন্ধ করে দেয়া, ডেস্টিনেশন এলার্ট ইত্যাদি আরো অনেক ফিচার দিয়ে থাকে।
আর দেশীয় প্রযুক্তি ও গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেমের সমন্বয়ে প্রহরী ভেইকেল ট্র্যাকিং সিস্টেম দিচ্ছে ২০ টিরও বেশি ফিচার। এসব ফিচারের মধ্যে রয়েছে
- লাইভ ট্র্যাকিং
- ইঞ্জিন অন/অফ এলার্ট
- জিও ফেন্স
- ইঞ্জিন লক/আনলক
- ডিভাইস রিমুভাল এলাট
- ট্রাভেল হিস্টোরি
- ব্যাসিক রিপোর্টস
- স্পিড ভায়লেশন এলার্ট
- ডেসটিনেশন এলার্ট
- ডেইলি সামারি মেইল
- এসি অন/অফ নোটিফিকেশন
- লাউড হর্ন
- প্যানিক বাটন
- স্ট্যান্ডার্ড রিপোর্ট
- ফুয়েল মনিটরিং সিস্টেম
- ডোর লক নোটিফিকশন
- এক্সটেনডেন্ট ডেইলি রিপোর্ট
এই সবগুলো ফিচারই জিপিএস প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে কাজ করে।
আপনি যদি আপনার গাড়ির সমস্ত খবর আপনার হাতের মুঠোয়ে রাখতে চান, তাহলে এমন একটি ভেইকেল ট্র্যাকিং সার্ভিস ব্যবহার করুন যা কিনা বেস্ট ম্যাপিং প্রযুক্তি যেমন গুগল ম্যাপের সহায়তা নিয়ে থাকে। প্রহরী তেমনই একটি ভেইকেল ট্র্যাকিং সার্ভিস প্রোভাইডার। গুগল ম্যাপের এর মাধ্যমে প্রহরী গাড়ির অবস্থান সম্পর্কে সঠিক তথ্যই দিয়ে থাকে।
দেশের পন্যে আধুনিকতার ছোঁয়ায় প্রহরী সবসময় গ্রাহককে সর্বোৎকৃষ্ট সেবা দিতে বদ্ধ পরিকর। আপনার গাড়ির সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা তো বটেই, প্রহরী আপনার গাড়ির খরচ কমাবে। পাশাপাশি আপনার এবং আপনার পরিবারের সদস্যদের রাখবে প্রহরীর সুরক্ষা বলয়ে।