বর্তমানে জার্নি মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হচ্ছে। তাই ভ্রমণ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা থাকা, লং কিংবা শর্ট যেকোনো জার্নিতেই বেশকিছু টিপস এবং ট্রিক্স ফলো করা এখন খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। আজকে আমরা কথা বলবো মূলত লং জার্নিতে হোমমেড খাবারের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা নিয়ে। কেননা লং জার্নিতে খাবার হচ্ছে অবিচ্ছেদ্য একটি বিষয়। ফলে আমরা ভুল খাবার নির্বাচন করার কারণে অনেক সময়ই অসুস্থ হয়ে পড়ি। তাই আজকের আলোচনার মাধ্যমে আমরা জেনে নিবো যেসকল নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যসম্মত হোমমেড খাবার হতে পারে আপনার লং জার্নির অন্যতম সঙ্গী।
হাইওয়ের পাশে রেস্টুরেন্ট থাকতে কেন ঘরের খাবার?
দেখুন, আমরা অনেক ক্ষেত্রেই খাবার তৈরির ঝামেলায় যেতে চাই না। ভাবি, হাইওয়ের পাশে অসংখ্য রেস্টুরেন্ট থাকতে কেন খাবার তৈরির ঝামেলা কাঁধে নিতে যাবো। আচ্ছা, একবার ভাবুন তো, রেস্টুরেন্টে খাবারের যে চড়া মূল্য সে হিসেবে হোমমেড খাবার অনেক বেশি সাশ্রয়ী এবং স্বাস্থ্যসম্মত নয় কী? হাইওয়ের পাশের কিংবা পর্যটন এড়িয়াগুলোতে খাবারের দাম থাকে অনেক বেশি। ফলে দুই জন কিংবা চারজন মানুষ খাবার খেলে যে পরিমাণ বিল আসে তা দিয়ে ঘরে প্রায় পাঁচ গুণ খাবার তৈরি করা সম্ভব।
খরচের কথাটা যদি আমরা একপাশে রাখি, তারপরও আমাদের সবচেয়ে বড়ো উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে আমাদের স্বাস্থ্য। সে হিসেবে, রেস্টুরেন্টের খাবার কখনোই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে না। যেহেতু, আপনি ভ্রমণে আছেন সেহেতু আপনি শারিরীক এবং মানষিক দুটো পরিক্রমাতেই অসুস্থ। তাই এসময় আপনার অনেক বেশি স্বাস্থ্য সচেতনা জরুরি। তাই ভ্রমণে নিরাপদ, পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবার অতীব জরুরি। যা একমাত্র হোমমেড খাবারই নিশ্চিত করতে পারে। রেস্টুরেন্ট নয় কখনোই নয়।
কেন লং জার্নিতে খাবেন না বাহিরের খাবার
আমরা সকলেই বিশ্বাস করি বাহিরের খাবার কখনোই ঘরের তৈরি খাবারের বিকল্প কিংবা স্বাস্থ্যসম্মত হতে পারে না। তবুও আমরা একান্ত বাধ্য না হলে বাহিরের খাবারের উপর নির্ভর করবো না। মাঝেমধ্যে বাহিরের খাবার বা স্ট্রেট ফুড গ্রহণ করা আর জার্নিতে বাহিরের খাবার খাওয়া এক কথা নয়। কারণ, লং জার্নিতে মানুষ শারিরীক মানষিক দুই ভাবেই অনেক বেশি অবসাদগ্রস্থ হয়ে পড়ে তাই সময়টাতে নিরাপদ খাবার গ্রহণ করা খুবই জরুরি।
ধরুণ, আপনি কোথায়ও জরুরি কোন কাজে যাচ্ছেন। তো এক্ষেত্রে আপনার সর্বোচ্চ প্রায়োরিটির বিষয় থাকবে সুস্থ থাকা না হয় আপনি জরুরি কাজ কিংবা ভ্রমণ উপভোগ করতে পারবেন না। তাই আপনাকে গ্রহণ করতে হবে নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার যা আপনার অবসাদকে দূর করে শরীর মন দুটোকেই চাঙ্গা রাগবে। বাহিরের খাবারে মশলা মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার করা হয় যা জার্নিতে এসিডিটির ঝুঁকির সৃষ্টি করে আপনাকে অনেক বেশি দূর্বল করে দিতে পারে। তাই লং জার্নিতে বাহিরের ভাজা পোঁড়া খাবার একেবারেই বর্জনীয়।
যে হোমমেড খাবারগুলো হতে পারে আপনার লং জার্নির সঙ্গী
লং জার্নিতে মশলাযুক্ত খাবার যতটা সম্ভব বর্জনীয়। এসময় সহজপাচ্য খাবার যতটা সম্ভব বয়কট করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ কেননা এখাবারগুলো দ্রুত হজম হয়ে আপনাকে বিপাকে ফেলতে পারে, যেকোনো সময়। তাই এমন খাবার রাখতে হবে যা আপনাকে অল্প গ্রহণ সাপেক্ষেও প্রচুর ক্যালোরি প্রদান করে আপনাকে শারীরিক এবং মানষিক দু’ক্ষেত্রেই রাখবে যথেষ্ট ফিট। চলুন জেনে নেই কিছু হোমমেড খাবারের বর্ণনা, যা আপনার লং জার্নিকে করবে অনেক বেশি উপভোগ্য এবং আনন্দের।
- পানি: পানি তো মাস্ট সাথে রাখতে হবে এটা সবাই জানে। তবে রাস্তায় যেহেতু আপনি চাইলেই যেখান সেখান থেকে পানি সংগ্রহ করতে পারবেন না এবং আপনাকে বোতলজাত পানি ক্রয় করতে হবে, যা অনেক খরচ সাপেক্ষ। তাই যথেষ্ট পরিমাণ নিরাপদ পানি সাথে নিতে ভুল করা যাবে না কিন্তু।
- হোমমেড স্যালেইন: যদিও স্যালাইন কিনতে পাওয়া যায় তবে আমরা জার্নিতে সাজেস্ট করবো গুড়, চিনি ও লবণ দিয়ে বাসায় তৈরি স্যালাইনকেই কেননা অসুস্থ রোগির জন্য যে স্যালাইন বাজারে সরবরাহ করা হয়, সে স্যালাইন সুস্থ মানুষের জন্য মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। তাই লং জার্নিতে হোমমেড স্যালাইন হোক আপনার সঙ্গী।
- রুটি: লং জার্নিতে আপনাকে এমন খাবার নির্বাচন করতে হবে যা সহজে হজম হয় না এবং অল্প গ্রহণ করে অনেক বেশি ক্যালোরি পাওয়া সম্ভবপর হয়। তো এক্ষেত্রে রুটি বেস্ট। রুটি তৈরি, সংরক্ষণ ও পরিবহন অত্যন্ত সহজ । রুট সহজে নষ্টও হয় না। তাছাড়া রুটি অল্প গ্রহণেও অধিক ক্যালোরি পাওয়া সম্ভব। তাই রুটি লং জার্নিতে খাবারের লিস্টে থাকে যেন মাস্ট।
- হোমমেড কেক: অনেক সময় রুটি খাওয়ার আগ্রহ থাকে না। তবে রুটির বিকল্প হতে পারে হোমমেড কেক। বাসায় চাইলে চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন ফ্লেভার যুক্ত করে দারুণ স্বাদের কেক তৈরি করা যায় সহজে। ফলে পুষ্টিকর কেক লং জার্নিতে আপনাকে ভিন্ন স্বাদের খাবারের যোগান দিবে অনায়সে।
- সিদ্ধ ডিম: লং জার্নিতে সিদ্ধ ডিমের বিকল্প অন্যকিছু হতে পারে না। ডিম আপনাকে একাধারে আমিষ, প্রোটিন এবং ফ্যাট তিনটাই সরবরাহ করে আপনার খুদাকে অনেকাংশেই পরাভূত করে দিবে সহজেই। তাই লং জার্নিতে হোমমেড খাবারের তালিকা থেকে সিদ্ধ ডিম যেন বাদ না পড়ে কখনোই।
- নুডুলস: লং জার্নিতে নুডুলস থাকাটা একপ্রকার বাধ্যতামূলকই বলা যায়। হালকা নাস্তা হিসেবে নুডুলস বেস্ট। তবে নুডুলস আগেভাগেই খেয়ে নিতে হবে না হয় নষ্ট হওয়ার শঙ্কা থেকে যাবে। নুডুলস মশলা কম দিয়ে রান্না করলে তা অনেক বেশি ক্যালোরি প্রদানে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
- কফি বা চা: লং জার্নিতে যাচ্ছেন, হোমমেড অনেক খাবারই নিচ্ছেন অথচ চা কিংবা বিশেষ করে কফি সাথে নিচ্ছেন না তা কি করে হয়! নিজেকে অনেক বেশি সতেজ এবং চাঙ্গা রাখতে লং জার্নিতে চা বা কফি থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যা একাধারে আপনার খুদা, অবসাদ, ক্লান্তি দূর করবে খুব সহজেই।
- হোমমেড বিস্কিট: জার্নিতে কিছুক্ষণ পর পর হালকা কিছু খাওয়াটা খুব জরুরি। এত করে জার্নিতে অবসাদ তৈরি হয় না। তো এক্ষেত্রে বিস্কিট হতে পারে খুব সহজ সমাধান। সাথে বিস্কিট রাখলে টুকটাক খেতে খেতে দেখবেন আপনি খুদার কথা প্রায় ভুলেই বসেছেন।
এছাড়া আপনি সঙ্গে নিতে পারেন ব্রেড, বাটার, জ্যাম, কেক, চিঁড়া, মুড়ি, চিনি, ইনস্ট্যান্ট কফি, ইন্সট্যান্ট স্যুপ নুডলসের প্যাকেট ইত্যাদি যা আপনাকে ভ্রমণের ছোট ছোট খুদা থেকে দিবে কমপ্লিট প্রটেকশন। বাড়িতে রান্না করা খাবার না নেওয়াই ভালো, কারণ তা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে, যদিও নেয়া হয় তবে তা নির্দিষ্ট সময় হিসেব করে খেয়ে ফেলতে হবে।
মানবজীবনে খাবার যেমন অবিচ্ছেদ্য অংশ তেমনি সুস্থতা আল্লাহর অনেক বড়ো নেয়ামত। জার্নিতে যেহেতু অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা অনেক বেশি সেহেতু স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ করে নিজেকে যতটা সম্ভব সুস্থ রাখার চেষ্টা করতে হবে। আর জার্নিতে সুস্থ থাকার জন্য হোমমেড খাবারের বিকল্প নেই। তাই উপরে আলোচ্য খাবারসমূহ-ই হোক আপনার আগামীর লং জার্নির খাবারের লিস্ট। সুস্বাস্থ বজায় থাকুক সর্বদা, সবজায়গায়, সব পরিস্থিতিতেই।
শখের গাড়ির সকল তথ্য অ্যাপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করতে এবং গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী ব্যবহার করতে পারেন। এটি একটি ভেহিক্যাল ট্র্যাকার সার্ভিস (VTS) ডিভাইস যা সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করেছে পাই ল্যাবস বাংলাদেশ লিমিটেড। প্রহরী – ভেহিক্যাল ট্র্যাকিং সিস্টেমে রয়েছে অ্যাপের মাধ্যমে ইঞ্জিন লক/আনলক করার সুবিধা, গাড়ির লাইভ ট্র্যাকিং আপডেট দেখা, এবং ট্রাভেল হিস্টোরি চেক করা সহ আরও অনেক সুবিধা বিস্তারিত জানতে দেখুন প্রহরী প্যাকেজ সমূহ।