রাস্তাঘাটে গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে, নিয়ম শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রতিটি দেশেই রয়েছে ট্রাফিক আইন। এসব ট্রাফিক আইনের বেশিরভাগই অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্যই প্রণয়ন করা হয় এবং বিভিন্ন দেশের ট্রাফিক আইনের মধ্যে অনেকাংশেই মিল দেখতে পাওয়া যায়। তবে মজার ব্যাপার হলো, পৃথিবীর কিছু কিছু দেশে, কিছু অদ্ভুত ট্রাফিক আইন প্রচলিত আছে যা শুধু অদ্ভুতই নয়, হাস্যকর ও বটে। চলুন দেখে নেয়া যাক এমন অদ্ভুত ও হাস্যকর কিছু ট্রাফিক আইন।
১.অপরিষ্কার গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের হলেই গুনতে হবে জরিমানা
শুনতে অদ্ভুত শোনালেও রাশিয়ার জনগণের জন্য এটাই সত্যি। রাশিয়ার রাস্তায় অপরিষ্কার গাড়ি চালানোর অনুমোদন নেই। কেউ অপরিষ্কার গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামলে তাকে গুনতে হবে দুই হাজার রুবল জরিমানা।
২.গাড়িতে বসে গালমন্দ করতে দেখলেই ছুটে আসবে ট্রাফিক পুলিশ
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ডে গাড়িতে বসে জনসম্মুখে কাউকে গালমন্দ করলে বা অভিসম্পাত করা আইনত দণ্ডনীয়। এইরকম অবস্থায় কাউকে দেখতে পেলে সেখানকার আইন অনুযায়ী জরিমানা হিসেবে গুনতে হয় ১০০ ডলার, অথবা সর্বোচ্চ ৯ মাসের কারাদণ্ডও জুটতে পারে।
৩.দিনের বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চালাতে হবে!
সব দেশেই রাতের বেলা গাড়ির হেডলাইট তো জ্বালাতেই হয়, তবে সুইডেনে দিনের বেলায়ও গাড়ির হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চালানোর নিয়ম করে রেখেছে সেখানকার সরকার। সুইডেনে শীতকালে কখনো কখনো দিনের বেলায় তীব্র তুষারপাতের কারণে অন্ধকার নেমে আসে। কিন্তু রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়াতেও সুইডেনে হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চালানোর বিধান মেনে চলতে হয় সেখানকার নাগরিকদের।
৪.গাড়িতে মদপান জায়েজ, কিন্তু মাতাল হওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ
কোস্টারিকায় গাড়িতে বসে মদপান করার জন্য কোন সাজার বিধান নেই, কিন্তু গাড়িতে বসে মদপান করে মাতাল হওয়া যাবে না। অদ্ভুত এই ট্রাফিক আইন অনুযায়ী, কোন গাড়ি চালকের রক্তে যদি ০.৭৫ শতাংশের বেশি এলকোহল পাওয়া যায় তাহলে তাকে সাজা পেতে হবে। তবে এই মাত্রা ০.৭৫ এর চেয়ে কম হলে কোন সাজা দেয়া হয় না।
৫.পুরোনো অন্তর্বাস দিয়ে গাড়ি মোছা নিষেধ!
যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে চালু রয়েছে এই অদ্ভুত ট্রাফিক আইন। গাড়ি ধৌত করার পর গাড়িটি মোছামুছির কাজে পুরনো অন্তর্বাস ব্যবহার করলে সেখানকার ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করা হয়। তবে নতুন অন্তর্বাস ব্যবহার করলে আইনত কোন সমস্যা নেই!!
৬.চালক মদ্যপ হলেও জরিমানা গুণতে হবে যাত্রীকে
জাপানের ট্রাফিক আইন অনুসারে, কোন গাড়ির চালক মদ্যপ বা মাতাল হলে জরিমানা গুণতে হবে যাত্রীকে। যাত্রী মদ পান করুক বা না করুক, চালক যদি মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালায় তাহলে সেটির দায়-ভার সম্পূর্ণভাবে যাত্রিকেই নিতে হবে। অর্থাৎ, অদ্ভুত হলেও সত্য যে, যাত্রী মদপান না করেও যদি মাতাল চালকের গাড়িতে ওঠেন তবে যাত্রীকেই গুণতে হবে জরিমানা।
৭.খালি গায়ে গাড়ি চালানো দণ্ডনীয় অপরাধ!
থাইল্যান্ডের জনগণকে অদ্ভুত যেই ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হয় সেটি হল- খালি গায়ে গাড়ি না চালানো। সেখানে খালিগায়ে গাড়ি চালানো আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এবং কাউকে খালিগায়ে গাড়ি চালানো অবস্থায় পাওয়া গেলে তার জন্য জরিমানার বিধান রয়েছে।
৮.গাড়ি চালাতে চালাতে কিছু খেতে দেখলে ছুটে আসবে ট্রাফিক পুলিশ
সাইপ্রাসে গাড়ি চালানোর সময় কিছু খাওয়া বা পান করা নিষেধ। এমনকি গাড়ি চালানোর সময় যদি হাঁটুর উপরে খাবার রেখে গাড়ি চালান তাহলেও আপনাকে জরিমানা করবে ট্রাফিক পুলিশ, কোন কোন ক্ষেত্রে জেল হাজতও হতে পারে।
৯.চলতি পথে তেল ফুরিয়ে গেলে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন
সাধারণত দূরের পথ পাড়ি দেয়ার সময় পথের মাঝে গাড়ির তেল বা ফুয়েল ফুরিয়ে গেলে, পথের ধারের কোন ফুয়েল ফিলিং স্টেশন থেকে আবার তেল ভরে নেয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু জার্মানিতে চলতি পথে গাড়ির তেল ফুরিয়ে গেলে তা ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হয়।
১০.পথ না জেনে বেরোলেই জরিমানা
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালামাবা অঙ্গরাজ্যে যদি কোন যাত্রী বা গাড়ি চালক তার গন্তব্যে যাওয়ার জন্য সঠিক রাস্তা না যেনে গাড়ি নিয়ে বের হন, তাহলে সেটি ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের আওতায় পড়বে। গাড়ি দাঁড় করিয়ে, সঠিক পথের নির্দেশনা জানতে পুলিশকে সাহায্য করতে বললে, পুলিশ চালককে সঠিক রাস্তা বাৎলে দেয়ার বদলে, জেল হাজতের রাস্তাও দেখিয়ে দিতে পারে বা জরিমানা করতে পারে!