প্রহরী

পড়তে লাগবে: 3 মিনিট

দুর্ঘটনা এড়াতে গাড়ির টায়ার রক্ষণাবেক্ষণের ৮ টি কার্যকরী টিপস

গাড়ির সবচাইতে দরকারি পার্টস হল গাড়ির চাকা। গাড়িকে চলতে হলে চাকার দরকার হবেই। আদিকাল থেকেই চাকার আবিষ্কারের পর থেকে এই চাকাকে আরো উন্নত করা হয়েছে। চাকার ব্যবহারেও এসেছে ভিন্নতা, এবং চাকার বিবর্তনের সাথে সাথে তৈরি হয়েছে চাকাকে আরো সুরক্ষিত এবং কার্যকরী করার নানান পদ্ধতি। গাড়ির টায়ার তেমন একটি পদ্ধতি। চাকার কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি, চাকার সুরক্ষা এবং এমনকি গাড়ির দুর্ঘটনা এড়ানোর ক্ষেত্রে গাড়ির টায়ারের ভূমিকা অপরিসীম। সঠিক এবং ভাল টায়ারের ব্যবহার হয়ত আপনার অজান্তেই আপনার জীবন এবং আপনার গাড়ির ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য প্রহরীর মতো কাজ করে। তাই গাড়ির টায়ার রক্ষণাবেক্ষণ অতীব জরুরী একটি বিষয়। দুর্ঘটনা এড়িয়ে জীবন বাঁচানোর জন্য গাড়ির টায়ার রক্ষণাবেক্ষণের ৮ টি টিপস দেখে নিতে পারেন।

১. টায়ারের স্ফীতি পরীক্ষা

গাড়ির টায়ারের সঠিক স্ফীতি বজায় থাকলে গাড়ির সার্বিক পারফর্মেন্সের উন্নতি ঘটে। সঠিক স্ফীতি গাড়ির ফুয়েল খরচ কমায়, গাড়ির সুরক্ষায় কার্যকরী প্রভাব ফেলে। প্রতিমাসে অন্তত একবার করে হলেও গাড়ির টায়ারের স্ফীতি পরীক্ষা করুন। তবে খেয়াল রাখবেন টায়ারের স্ফীতি যেন ঠাণ্ডা অবস্থায় পরিমাপ করা হয়। বাজারে টায়ার ইনফ্লেটর কিট পাওয়া যায়, যার মাধ্যমে টায়ারের স্ফীতি মাপা যায় ।

টায়ারের স্ফীতি পরীক্ষা

২.টায়ারের স্ফীতি সঠিক মাত্রায় রাখা

গাড়ির চাকা ঠিক রাখার জন্য গাড়ির টায়ারের ফাপা স্ফীতি এবং এর চাপ সঠিক মাত্রায় থাকা বাঞ্ছনীয়। সঠিক মাত্রায় স্ফীত এবং প্রেশার থাকলে গাড়ির টায়ার অনেকদিন পর্যন্ত ভাল থাকে। গাড়ির টায়ারের স্ফীতি কি পরিমাণ থাকা উচিৎ তা আপনার গাড়ির প্লেসকার্ড মেনুয়ালে পাওয়া যাবে। মেনুয়াল দেখে গাড়ির টায়ারের সঠিক মাত্রার স্ফীতি এবং প্রেশার বজায় রাখুন।

৩. নিয়মিত টায়ারের ক্ষত পরীক্ষা করুন

প্রতিদিন রাস্তার ধুলা বালি নুড়িপাথরের উপর দিয়ে চলতে চলতে অনেক সময় টায়ারের গায়ে ক্ষত হয়ে টায়ার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আর ক্ষতিগ্রস্ত টায়ার ব্যবহার করলে টায়ার পাংচার থেকে শুরু করে ব্রেক ফেইল হতে পারে এবং দুর্ঘটনার সমূহ সম্ভাবনা তৈরি হয়। তাই নিয়মিত টায়ারের গায়ে ক্ষত পরীক্ষা করে নিন এবং ক্ষতিগ্রস্ত টায়ার বদলে নতুন টায়ার ব্যবহার করুন।

৪. চাকা আটকে গেলে বেশি ঘুরাবেন না

অনেক সময় কাদায় বা বালিতে চাকা আটকে গেলে, বার বার গিয়ার চেপে আটকে পড়া অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে চান। এতে করে গাড়ির টায়ার সহ, গাড়ির চাকা অধিক পরিমানে ঘুরতে থাকে এবং ঘষা লেগে ক্ষয় হতে থাকে। এতে করে টায়ারের থ্রেড এবং স্ফীতির তারতম্য হয়ে গাড়ির টায়ার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই কাদায় বা বালিতে আটকে গেলে চাকা বারবার করে ঘুরাবেন না।

কাদায় গাড়ির চাকা আটকে গেলে বেশি ঘুরাবেন না।

৫. সঠিক ভারবহনকারী গাড়ির টায়ার ব্যবহার করুন

গাড়ির প্রকৃতি এবং ভার বহনের ক্ষমতা অনুসারে গাড়িতে টায়ারের ব্যবহারও বিভিন্ন রকম হতে পারে। স্ট্যান্ডার্ড ভারবহনের গাড়িতে কম বা বেশি ভারবহনকারী টায়ার ব্যবহার করবেন না। আবার অধিক ভারবহনের গাড়িতে কম ভারবহনকারী টায়ার বহন করবেন না। নতুবা দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থেকে যায়।

৬. ওটি রেজন্যান্ট টায়ার ব্যবহার করুন

টায়ারের ক্ষয় রোধে ওজি রেজন্যান্ট টায়ার ব্যবহার করুন। ওটি রেজন্যান্ট এক ধরণের রাসায়নিক উপাদান, যা টায়ারের রাবারে উপস্থিত থাকলে টায়ারের ক্ষয় রোধ করে থাকে। তাই টায়ার কেনার সময় নিশ্চিত হয়ে নিন আপনার গাড়ির টায়ার ওটি রেজন্যান্ট কিনা।

৭. সঠিক থ্রেড ডেপথের টায়ার ব্যবহার করুন

গবেষণা করে গেছে, টায়ারের সঠিক পারফর্মেন্স এবং দুর্ঘটনা এড়াতে টায়ারের থ্রেড ডেপথ ন্যূনতম ১.৬৬ মি/মি হওয়া উচিৎ। টায়ারের থ্রেড ডেপথ এর চাইতে কম হলে টায়ার রাস্তার বাক ঘুরতে গিয়ে, পিছলে যেতে পারে এবং দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই সঠিক থ্রেড ডেপথের টায়ার ব্যবহার করুন।

থ্রেড ডেপথ হতে হবে ১.৬৬ মি.মি. এর কম

৮. পুরাতন এবং সেকেন্ড হ্যান্ড টায়ার ব্যবহার করবেন না

গাড়ির চাকায় পুরোনো এবং সেকেন্ড হ্যান্ড টায়ার ব্যবহার না করাই উত্তম। অনেক সময় অব্যবহৃত গাড়ির টায়ার পুরাতন হয়ে গেলে, টায়ারের গুনাগুণ আর অক্ষুণ্ণ থাকে না। আবার সেকেন্ড হ্যান্ড টায়ারও সবসময় তার গুনাগুণ ধরে রাখতে পারে না। তাই গাড়ির সুরক্ষায় সবসময় পুরাতন এবং সেকেন্ড হ্যান্ড টায়ার ব্যবহার পরিহার করে চলতে হবে। এবং টায়ার কেনার সময় অবশ্যই টায়ারের গায়ে, এর উৎপাদনের তারিখ দেখে কিনবেন।

সঠিক গাড়ির টায়ার নির্বাচন এবং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের ফলে গাড়ি থাকবে সুরক্ষিত এবং কমে যাবে জীবনের ঝুকি। প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে জীবন থাকুক সুন্দর এবং সুরক্ষিত। টায়ারের পাশাপাশি গাড়িতে প্রহরী ভেইকেল ট্র্যাকার ব্যবহার করলে দৈনন্দিন জীবন যাপন হবে আরো সহজ এবং নিরাপদ। 

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    Share your vote!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top