প্রহরী

পড়তে লাগবে: 4 মিনিট

car price in Bangladesh : নিজের গাড়ি নিজেই কিনুন, দেখে-শুনে-বুঝে কিনুন

‘Tell me something about car price in Bangladesh . What does it depend on?’ হোয়াটস অ্যাাপে চাচাত ভাইয়ের করা এমন প্রশ্নে আমার একটু খাবি খাওয়ার মতো অবস্থা হলো। আমি একটা ইলেক্ট্রনিক্স কোম্পানিতে কাজ করি, তার ওপর আমাদেরই একটা Vehicle tracking device আছে বাজারে, তাই হয়ত উত্তরটা আমার জানা আছে ভেবেছিল সে।

সেদিনই নেট-টেট ঘেঁটে দেখলাম এই সংক্রান্ত কী কী তথ্য পাওয়া যায়। মনে হলো, আমার পাওয়া তথ্যগুলো অন্যদেরও জানাই। যারা জানে না, বা জানতে চায়, তাদের কিছু উপকার হবে তাতে। সেই উদ্দেশ্যেই খুব সহজ করে আজকের নিবেদন-  ‘ car price in Bangladesh : নিজের গাড়ি নিজেই কিনুন, দেখে-শুনে-বুঝে কিনুন।’

বাংলাদেশে গাড়ির দাম ( car price in Bangladesh ) কিভাবে নির্ধারণ করা হয়? 

বাংলাদেশে গাড়ির সঠিক দাম ( car price in Bangladesh ) কত হবে, সেটা নির্ভর করে মূল প্রোডাকশন প্রাইস, ইমপোর্ট ট্যাক্স এবং অন্যান্য ভ্যাটের ওপর। যেহেতু, ট্যাক্স-ভ্যাট সময়ে সময়ে বদলায়, তাই গাড়ির দামও ( car price in Bangladesh ) সময়ে সময়ে বাড়ে-কমে। ২০১৭-২০১৮ বাজেট অনুযায়ী, ভ্যাট এখনো ১৫%-ই আছে। এছাড়া, ১.৫L ইঞ্জিনের জন্য ২৫%, ২L ইঞ্জিনের জন্য ১০০% এবং ইঞ্জিনের সাইজ ও পাওয়ারের ওপর ভিত্তি করে ২০০% পর্যন্ত ইমপোর্ট ট্যাক্স বা আমদানি কর আরোপিত হবে। বাংলাদেশে গাড়ির দামের ক্ষেত্রে ( car price in Bangladesh ) অন্যান্য প্রচলিত ট্যাক্সগুলো হলো- SD (supplementary duty) , RD (regulatory duty) এবং AIT (advance income tax)।

SD= (১০০% CIFD),  RD= ৪% (SD+CIFD),  AIT= ৫% CIFD।

এগুলোর সঙ্গে আমদানিকারক ধরবেন আমদানি খরচ, ইনস্যুরেন্স এবং অন্যান্য খরচ।

ধরুন, আপনি একটা Audi r8 গাড়ি কিনলেন, যেটার ইঞ্জিন ৫L ক্ষমতাসম্পন্ন। যদি, গাড়িটার মূল প্রোডাকশন মূল্য হয় ১৬২K ইউএস ডলার, তাহলে আপনাকে টোটাল খরচ গুনতে হবে ১ মিলিয়ন ডলার প্রায়। কেননা, ৫L ইঞ্জিনের জন্য ৮০০% ইমপোর্ট ট্যাক্স দিতে হবে আপনাকে। এখন তাহলে ডলারের দাম হিসেব করে দেখুন, বাংলাদেশী মুদ্রায় কত হয়।

Car cleaning-এর ম্যাজিক উপকরণ ক্লে-বার ব্যবহার করছেন তো?!

আমদানি প্রক্রিয়ার ওপরও নির্ভর করে গাড়ির দাম

বাংলাদেশে গাড়ির দাম ( car price in Bangladesh ) আমদানি প্রক্রিয়ার ওপরও নির্ভর করে। বাংলাদেশে গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে সাধারণত তিনটি প্রসেস ফলো করা হয়। এগুলো হলো- CBU, CKD এবং chassis fitted with engine।

 ১। CBU বলতে বোঝায় Complete build up cars। মানে, পুরোপুরি তৈরি করা গাড়ি। গাড়ি আমদানিকারকেরা এক্ষেত্রে ২১২% ট্যারিফ পরিশোধ করে থাকেন।

২। CKD বলতে বোঝায় Complete knock down process। এই প্রক্রিয়ায় গাড়ির পার্টস আমদানি করা হয় কেবল। সেগুলো ফিট করা হয় আমাদের দেশেই। এক্ষেত্রে, আমদানিকারক ১০৫% ট্যারিফ পরিশোধ করেন।

৩। অন্য পদ্ধতিতে (chassis fitted with engine) ৫৯% ট্যারিফ পরিশোধ করেন আমদানিকারক।

বলা বাহুল্য, আপনি যদি complete build up কার কেনেন, টাকা খরচ করতে হবে সব চাইতে বেশি।

নিজেই করছেন না তো শখের গাড়িটির সর্বোচ্চ ক্ষতি?

কম দামে কেনা যায় রিকন্ডিশন্ড গাড়ি

বাংলাদেশে রিকন্ডিশন্ড বা প্রি-ইউজড গাড়ি খুব জনপ্রিয়। তুলনামূলকভাবে অল্প দামের কারণে মধ্যবিত্তদের অনেকেই এই গাড়িগুলো কিনতে সক্ষম হচ্ছেন। রিকন্ডিশন্ড মানে সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি, কিন্তু ঠিক সেকেন্ড হ্যান্ড নয়। অর্থাৎ, গাড়িগুলো যারা দেশের ডিলারদের কাছে বিক্রি করেন, তারাই নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সেগুলোর প্রয়োজনীয় সারাই সম্পন্ন করে নেন। তারপর আসে সেগুলো যাচাইয়ের পালা। টয়োটা ব্যান্ডের কোনো গাড়ি ঠিক টয়োটা কোম্পানির কাছ থেকেই যাচাই করে নেয়া হয়। এভাবে অন্যান্যও। রিলেটেড কোম্পানি যদি গাড়িগুলোকে ১০০ ভাগ ঠিকঠাক আছে মর্মে সার্টিফিকেট দেয়, তবেই কেবল সেগুলো রপ্তানির জন্য অনুমোদন পায়।

১৫ লাখের মধ্যে ‘রিকন্ডিশন কার’ খুঁজছেন?

এই গাড়িগুলোর দাম নির্ভর করে আগে কত সময় ব্যবহৃত হয়েছে তার ওপর। সাধারণত, ৩-৫ বছর ইউজড গাড়ি আমদানির অনুমতি রয়েছে। গাড়িগুলোর দাম কম হওয়ার কারণ হলো, আমদানিকারক এই ক্ষেত্রে ডিপ্রিসিয়েশন বেনেফিট বা মূল্যহ্রাস সুবিধা পেয়ে থাকেন। বাণিজ্যের ভাষায় যেটাকে বলা হয় ‘অবচয় সুবিধা’।

গাড়িতো কেনা হলো, এইসব প্রয়োজনীয় বিষয় জানেন কী??

অবচয় সুবিধা কোন গাড়ির ক্ষেত্রে কেমন?

৬ মাস-১ বছর বয়সের গাড়ির ক্ষেত্রে ১৫%, ১-২ বছর বয়সের গাড়ির ক্ষেত্রে ২৫%, ২-৩ বছর বয়সের গাড়ির ক্ষেত্রে ৩৫%, ৩-৪ বছর বয়সের গাড়ির ক্ষেত্রে ৪০% এবং ৪-৫ বছর বয়সের গাড়ির ক্ষেত্রে ৪৫% ডিপ্রিসিয়েশন বেনেফিট পেয়ে থাকেন আমদানিকারক। উপরে বর্ণিত অন্য পদ্ধতিগুলোর ক্ষেত্রে এরকম কোনো সুবিধা পাওয়া যায় না। ধরুন, একটি গাড়ি আমদানি করার জন্য আমদানিকারকের পরিশোধ করার কথা ছিল ১০০ টাকা। এখন তিনি যদি ৪৫% অবচয় সুবিধা পান, তাহলে সেটা কমে ৫৫ টাকায় আসবে। এর সঙ্গে যোগ হবে যাবতীয় ভ্যাট। আপনি যদি রিকন্ডিশন্ড গাড়ি কেনেন, কত বছরের ইউজড গাড়ি কিনছেন সেটা ভালোভাবে বুঝে নিতে হবে।

জেনে গেলেন কী কী বিষয়ের ওপর নির্ভর করে বাংলাদেশে গাড়ির দাম ( car price in Bangladesh )। এখন নিজের গাড়ি নিজেই কিনুন, দেখে-শুনে-বুঝে কিনুন। 🙂

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    Share your vote!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top