প্রহরী

পড়তে লাগবে: 9 মিনিট

সেরা কিছু হাইব্রিড গাড়ি

২০২৪ সালের গাড়ি বাজারে এসেছে সেরা কিছু পরিবেশবান্ধব এবং জ্বালানি সাশ্রয়ী হাইব্রিড। গাড়ির রাজ্যে এই গাড়িগুলো খুলেছে এক নতুন অধ্যায়। প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে, হাইব্রিড গাড়িগুলো এখন আরও শক্তিশালী, স্টাইলিশ এবং জ্বালানি সাশ্রয়ী হয়ে উঠেছে। দারুণ কাজের এই হাইব্রিড গাড়ি নিয়েই আলোচনা হবে আজকের ব্লগটিতে

হাইব্রিড কেন সেরা?

পরিবেশবান্ধব গাড়ি হিসেবে হাইব্রিডের বিশ্বজুড়ে খ্যাতি বেশ পুরনো। প্রচলিত আছে, কেউ একবার হাইব্রিডের মজা বুঝে গেলে অন্য গাড়ি তার ভালো লাগা দুষ্কর। আসুন জেনে নেই ঠিক কোন সুযোগ সুবিধার জন্য এর এই সুখ্যাতি।

  • হাইব্রিড গাড়িগুলোর আসনগুলো এমনভাবে বসানো হয় যাতে করে যাত্রীদের গাড়ির ভেতরে প্রবেশ ও বাইরে বের হওয়া ক্ষেত্রে কোন ধরনের সমস্যা না হয়।
  • বড় পরিবার বা দলগত ভ্রমণের জন্য হাইব্রিডকে আদর্শ হিসেবে ধরা যায়।
  • শুরু হাইব্রিডকে জ্বালানি সাশ্রয়ী হিসেবে ডিজাইন করা। বর্তমানে বাজারে অনেক ধরনের জ্বালানি সাশ্রয়ী হাইব্রিড পাওয়ারট্রেন দেখা যায়। যা গাড়িতে উল্লেখযোগ্য ভাবে গ্যাস সাশ্রয় করতে সাহায্য করে।
  • বেশি যাত্রী বা মালামাল নেয়ার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ধারনক্ষমতার প্রয়োজন হলে ভেতরে আসন সরিয়ে নেয়া যায়।

২০২৪ সালের সেরা কিছু হাইব্রিড গাড়ি

হাইবব্রিড গাড়ি প্রথম বাজারে আসার পর থেকে আজ অদ্যাবধি যতগুলো মডেল রাস্তায় নেমেছে, তার সব নিয়ে আলোচনা করতে গেলে দিন পেরিয়ে যাবে। কিন্তু লিস্ট শেষ হবে না। তাই আজ আপাতত জেনে নেই শুধুমাত্র ২০২৪ সালের সেরা কিছু হাইব্রিড গাড়ি ও তাদের বিশেষ কিছু ফিচার নিয়ে।

১. Honda Odyssey

honda odyssey হাইব্রিড গাড়ি

ডিজাইন ও স্টাইলিং

  • আকর্ষণীয় রং, বাম্পার, সাথে ১৮ ও ১৯ ইঞ্চির ভারি চাকা রয়েছে হোন্ডার এই অত্যাধুনিক মডেলের গাড়িতে। 
  • অটো অন অফ ফাংশন বিশিষ্ট এলইডি হেডলাইটের নিচে রয়েছে এলইডি ফগ লাইটও। 
  • দরজায় লাগানো ওয়েলকাম লাইট জ্বলে উঠবে দরজা খোলার সাথেই। যেন অন্ধকারেও গাড়ি থেকে বের হতে সমস্যা না হয়।
  • এটির ছাদে লাগানো রুফ রেইল ও ক্রসবার গাড়িটির সৌন্দর্য বৃদ্ধির সাথে মালামালের সুরক্ষাও নিশ্চিত করে।
  • গাড়িতে বসে আকাশের দৃশ্য দেখা কিংবা খোলা বাতাসের ছোয়া পেতে এক টাচেই খোলা যাবে গাড়িটির মুনরুফ বা সানরুফ।

পার্ফরমেন্স

  • ৩.৫ লিটার V-6 ইঞ্জিনের সাথে রয়েছে ২৮০ হর্সপাওয়ার শক্তি।
  • মাত্র ৭.৬ সেকেন্ড ০ থেকে ৬০ mph গতি তোলার ক্ষমতা রয়েছে এর।
  • এতে রয়েছে ৪৫০০ পাউন্ড পর্যন্ত মালামাল বহনের ক্ষমতা।

আরাম ও সুবিধা

  • ৮ জন ধারণক্ষমতা বিশিষ্ট এই গাড়িটির দ্বিতীয় সারির সিটগুলো স্লাইড করে ইচ্ছামতো সরানো কিংবা ভাজ করে রাখা যায়। 
  • লেদারের আরামদায়ক সিটে বসে বিলাসবহুলভাবে যাত্রা করা যায় গাড়িটিতে।
  • ভ্যাত্রীদের বিনোদনের জন্য রয়েছে ১০.২ ইঞ্চি আধুনিক মাল্টিমিডিয়া স্ক্রিনের ব্যবস্থা। 
  • ঠান্ডা আবহাওয়াতে ড্রাইভ করতে করতে হাত ঠান্ডা হয়ে যেন কষ্ট না পাওয়া লাগে, তাই গাড়িটিতে ব্যবস্থা করা হয়েছে লেদারের হিটেড স্টিয়ারিংয়ের।
  • সামনে থেকে পেছনে তিন ভাগে বিভক্ত ক্লাইমেট কন্ট্রোলের ব্যবস্থা। অর্থাৎ, একেক সারিতে একেক রকম তাপমাত্রা পরিবর্তন করা যাবে।

প্রযুক্তি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা

  • নানান ফিচারসে নিজের স্মার্টফোন দ্বারা নিয়ন্ত্রণে জন্য এতে রয়েছে ৮ ইঞ্চি টাচস্ক্রীনে এন্ড্রয়েড অটো ও এপল কারপ্লে ব্যবহারের সুবিধা।
  • চাইলে গাড়ির চাবি ব্যবহার না করে শুধুমাত্র একটি পুশবাটন চেপেই স্টার্ট দেয়া যায় গাড়ি।
  • পেছনে বসা যাত্রীদের সাথে কোন প্রয়োজনে যেন মাথা পেছনে না ঘুরিয়েই কথা বলার জন্য রয়েছে “কেবিন ওয়াচ’ ও “কেবিন টক” ফিচার।
  • হোন্ডা (Honda) এর নিজস্ব স্যাটেলাইট লিংকড নেভিগেশন সিস্টেমের সাহায্যে নেটওয়ার্ক না থাকলেও ব্যবহার করা যায় অফলাইন ম্যাপ। 
  • হাইব্রিড এই গাড়িতে হ্যান্ডস ফ্রি পাওয়ার টেইলগেট খোলা যাবে হাতের স্পর্শ ছাড়াই, শুধুমাত্র রেয়ার বাম্পারের নিচে পা নাড়ালেই। 
  • গাড়ির দুই পাশে বা পেছনে বিপদজনক অবস্থানে অন্য কোন বাহন থাকলে তা দ্রুত শনাক্ত নিশ্চিত করতে এতে রয়েছে বিশেষ রাডার সেন্সর। 
  • পথচারী ও ট্রাফিক সিগন্যাল শনাক্ত এবং বিপদজনক পরিস্থিতিতে অটোমেটিক ব্রেকের ব্যবস্থা আছে।
  • নিজের লেন থেকে গাড়ি সরে গেলে অটোমেটিক এলার্ট পৌছে যায় চালকের কাছে।

জ্বালানি

  • গাড়িটি ফ্রন্ট হুইট ড্রাইভ ফিচার উল্লেখযোগ্য হারে জ্বালানি সাশ্রয় করে। 
  • এর জ্বালানি ক্ষমতা শহরের রাস্তায় ১৯ mpg  (মাইল পার গ্যালন) ও হাইওয়েতে ২৮ mpg। সমন্বিত ভাবে যা দাড়ায় ২২ mpg.

২. Chrysler Pacifica Hybrid

chrysler pacifica hybrid car

ডিজাইন ও স্টাইলিং

  • ১৮ ইঞ্চি ধূসর চাকার বাহ্যিক ডিজাইনের সাথে হাইব্রিডটির ভেতরে রয়েছে লেদার ট্রিমড সিট। 
  • গাড়ির ভেতরের ৭ টি সিটকে ৮১ টি ভিন্ন উপায়ে কনফিগার করা যায়।
  • হাইব্রিডটির সামনে পেছন্ব রয়েছে অত্যাধুনিক মানের হেড ও টেইললাইট। সাথে রয়েছে ফগ লাইটও।
  • আকর্ষণীয় ডিজাইনের হুইল ব্যবহার করা যাবে ১৭ থেকে ২২ ইঞ্চির রেঞ্জ পর্যন্ত।
  • বদ্ধ গাড়িতে উন্মুক্ত আলো বাতাসের ছোয়া দিতে রয়েছে বিশাল সানরুফ।

পার্ফরমেন্স

  • ৩.৬ লিটার V-6 ইঞ্জিনের সাথে দুটি ফ্রন্ট মাউন্ট করা বৈদ্যুতিক মোটর ও একটি 16-kWh  ব্যাটারি প্যাক সম্বলিত হাইব্রিড এই গাড়িটি কোন পেট্রোল খরচ না করেই প্রায় ৩২ মাইল পর্যন্ত মসৃণ গতিতে চলতে পারে।
  • বিশেষ এই গাড়িটির আনুমানিক রেঞ্জ ৫২০ মাইল পর্যন্ত।

আরাম ও সুবিধা

  • আবহাওয়ার ভিন্নতার কথা বিবেচনায় সামনের সারির সিটগুলোতে রয়েছে হিটিং ও কুলিং এর ব্যবস্থা।
  • চালকের সুবিধার্থে হিটেট স্টিয়ারিংয়ের ব্যবস্থাও রয়েছে।
  • দ্বিতীয় সারির সিটগুলো সুবিধামতো সরানো যায়।
  • তৃতীয় সারিতে থাকা বেঞ্চ সিটগুলো ভাজ করে গাড়ির ফ্লোরের ভেতর ঢুকিয়ে ফেলা যায়। 
  • লম্বা ভ্রমণে যাত্রীদের বিনোদনের সঙ্গী হিসেবে রয়েছে ডুয়েল স্ক্রিনের ব্যবস্থা।
  • তিন ভাগে বিভক্ত ক্লাইমেট কন্ট্রোল ফিচার সব যাত্রীর আরামদায়ক যাত্রা নিশ্চিত করে।
  • পাওয়ার লিফটগেট, চাবি ছাড়া গাড়ি ওপেন করা ইত্যাদি সুবিধা এটির ব্যবহারকে আরো সহজ করে।

প্রযুক্তি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা

  • নিজের সেলফোনে কানেক্ট করার জন্য এপল কারপ্লে ও এন্ড্রয়েড অটোর ব্যবস্থার সাথে রয়েছে ৭ ইঞ্চি ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার ও  ১০.১ ইঞ্চির আধুনিক টাচস্ক্রিন। 
  • ওয়্যারলেস কানেকশন, ব্লুটুথ, পুশ বাটন স্টার্ট, স্যাটেলাইট রেডিও ইত্যাদির সাথে গাড়িটির ভেতর রয়েছে ৪ টি ইউএসবি পোর্ট।
  • ব্যস্ত হাতে গাড়ির দরজা খুলতে অসুবিধা হলেও সমস্যা নেই। গাড়ির দরজার নিচে পা বাতাসে স্লাইড করলেই অটোমেটিক খুলে যাবে স্লাইডিং ডোর।
  • পেছনে থাকা পরিবার বা দলের বাকি সদস্যদের সাথে যোগাযোগ কিংবা ছোট বাচ্চা মনিটর করার জন্য ব্যবস্থা আছে বিশেষ ক্যামেরার।
  • ভ্রমণপথে যাত্রীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেয়ার জন্য এতে রয়েছে ১১৫টি থেকেও বেশি সেফটি ফিচার। 
  • রিভার্স পার্কিং, ব্যাকে নেয়ার সময় কিংবা চলন্ত অবস্থায় পেছন থেকে যে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ধাক্কা এড়াতে গাড়িটির পেছনে রয়েছে বিশেষ মনিটরিং সিস্টেম। 
  • সর্বোচ্চ নিরাপত্তার জন্য ৩৬০ ডিগ্রি ভিউ বিশিষ্ট ক্যামেরার ব্যবস্থা রয়েছে।
  • সম্ভাব্য কোন ধাক্কা বা সংঘর্ষ এড়াতে রয়েছে উন্নত প্রযুক্তি প্রয়োজনে অটোমেটিক ব্রেক করতে পারে।

জ্বালানি

  • জ্বালানি ক্ষমতা সমন্বিত ভাবে ৮২ mpg।
  • গ্যাস নির্ভর ইঞ্জনের জন্য এই ক্ষমতা ৩০ mpg।
  • কোন জ্বালানি খরচ ছাড়াই গাড়িটি ৩২ মাইল পর্যন্ত চলতে পারে।

৩. Toyota Sienna

toyota sienna

ডিজাইন ও স্টাইলিং

  • টয়োটা কোম্পানির এই গাড়িটি ১৭ থেকে ২০ ইঞ্চি রেঞ্জের গাড় কালো চাকা সহ স্টাইলিশ বাহ্যিক সৌন্দর্য যে কোন গাড়িপ্রেমিকে আকর্ষণ করতে বাধ্য।
  • মডার্ন ডিজাইন ও কালারের সাথে আকর্ষণ বাড়িয়েছে সামনে ও পেছনের আধুনিক বাম্পার। 
  • গাড়িটির লেদার ট্রিমড ও আকর্ষণীয় প্রশস্ত সানরুফ একে আরো স্টাইলিশ করে তুলেছে। 
  • গাড়িটির ছাদে থাকা রুফ রেইল মালামাল বহনসহ বহুমুখী কাজের সাথে বাড়িয়েছে এর সৌন্দর্যও।

পারফরম্যান্স

  • ২.৫ লিটার ৪ সিলিন্ডার যুক্ত ইঞ্জিন ও ২ টি ইলেক্ট্রিক মোটর বিশিষ্ট হাইব্রিডটির হর্সপাওয়ার ২৪৫।
  • অসমান ও প্রতিকূল রাস্তায় টয়োটা সিয়েনা গাড়ির “অল হুইল ড্রাইভ” (AWD) সিস্টেম সর্বোচ্চ মসৃণতার সাথে যাত্রা নিশ্চিত করে। 
  • টয়োটার আধুনিক এই হাইব্রিড গাড়িতে রয়েছে ৩৫০০ পাউন্ড পর্যন্ত “টোয়িং” (Towing) ক্ষমতা। অর্থাৎ, প্রয়োজন পড়লে ৩৫০০ পাউন্ড পর্যন্ত ভারী কোন কিছু এর পেছনে বেধে টেনে নেয়া যাবে।
  • মাত্র ৭.৯ সেকেন্ডে শূন্য থেকে ৬০ mph গতি তুলতে পারে গাড়িটি।

আরাম ও সুবিধা

  • ৮ জন যাত্রী বহনযোগ্য তিন সারি বিশিষ্ট গাড়িটির দ্বিতীয় ও তৃতীয় সারির সিটগুলো সুবিধামতো সরানো যায়।
  • এটিঢ় প্রথম ব্যবহার থেকে ১০ বছর কিংবা প্রথম ১৫০ হাজার মাইল ব্যবহার পর্যন্ত ব্যাটারি ওয়ারেন্টি দিবে টয়োটা কোম্পানি।
  • ভ্রমণ পথে যাত্রীদের বিনোদনের সঙ্গী হিসেবে রাখা হয়েছে  ১১.৬ ইঞ্চি মাল্টিমিডিয়া ডিসপ্লে স্ক্রিন।

প্রযুক্তি ও  নিরাপত্তা ব্যবস্থা

  • ড্যাশবোর্ডের ৯ ইঞ্চি টাচস্ক্রীনে এপল কারপ্লে, এন্ড্রয়েড স্টুডিও, এমাজন সহ ব্যবহার করা যাবে নানান ফিচার।
  • এটির চালক ও সামনে বসা ব্যাক্তি পেছনে না ফিরেই পেছনের যাত্রীদের যোগাযোগ করতে পারবেন  বিল্ট-ইন মাইক্রোফোন ও স্পিকারের মাধ্যমে। 
  • ১৫০০ ওয়াট পাওয়ার সম্বলিত সিয়েনা হাইব্রিডটিতে রয়েছে মোট ৭ টি ইউএসবি পোর্ট। 
  • এটির দুই পাশের স্লাইডিং ডোর টেনে খুলতে না চাইলে হাল্কা করে লাথি দিলেই হবে দরজায়। কারন এতে রয়েছে “কিক এক্টিভেটেড ডুয়েল পাওয়ার” স্লাইডিং ডোর। 
  • এর রেয়ার ভিউ মিররটি উন্নত মানের ক্যামেরার সাথে কানেক্টেড। চাইলে দেখা যাবে জুম করেও। 
  • এপল কারপ্লে, এন্ড্রয়েড অটো সহ ইত্যাদি ব্যবহারের সুবিধা সহ রয়েছে ৯ ইঞ্চির মাল্টিমিডিয়া স্ক্রিন।
  • সহজে গাড়ি পার্কিং করার জন্য টয়োটার রয়েছে ফ্রন্ট এবং রেয়ার পার্কিং এসিস্ট। যার সাহায্যে চারপাশের অবস্থান সম্পর্কে  অডিও ও ভিস্যুয়াল নোটিফিকেশন পাওয়া যায়। 
  • অনাকাঙ্ক্ষিত কোন সংঘর্ষ বা ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে গাড়িটিতে রয়েছে সাথে অটোমেটিক ব্রেক সিস্টেম।

জ্বালানি

  • জ্বালানি সাশ্রয়ী  হাইব্রিড সেটাপের গাড়িটির জ্বালানি ক্ষমতা ফ্রন্ট হুইল ড্রাইভে ৩৬ mpg এবং অল হুইল ড্রাইভে ৩৫ mpg।

৪. Kia Carnival

Kia Carnival

ডিজাইন ও স্টাইলিং

  • চালক ছাড়াও ৭ জন যাত্রীর বসার প্রশস্ত জায়গা রয়েছে হাইব্রিডটির ভেতর। 
  • গাড়িটির সুদৃশ্য স্লাইডিং ডোরের আকর্ষণ বাড়াতে রয়েছে ওয়েলকাম লাইটের ব্যবস্থা। যা দরজা খোলার সাথেই মাটিতে আলোকপাত করবে।
  • গাড়িটির ফ্রন্ট সিট এরিয়া থেকে একদম পেছন পর্যন্ত সবকিছুই অত্যাধুনিক ও আকর্ষণীয়।
  • এটির ঠিক দ্বিতীয় সারির উপরেই রয়েছে সুদৃশ্য সানরুফ।

পারফরম্যান্স

  • ৩.৫ লিটার V-6 ইঞ্জিন ও স্বয়ংক্রিয় গিয়ারবক্স সম্বলিত এর ইঞ্জিনের হর্সপাওয়ার ২৯০।
  • এর গ্যাস ইঞ্জিনে ৮ স্পিড অটো ট্রান্সমিশনের সাথে এতে রয়েছে শুধুমাত্র ফ্রন্ট হুইল ড্রাইভের ব্যবস্থা।
  • মাত্র ৭ সেকেন্ডে ৬০ mph গতি তুলতে পারে গাড়িটি।

আরাম ও সুবিধা

  • মালামাল বহনের জন্য সর্বোচ্চ পরিমাণ খালি জায়গার ব্যবস্থা করতে কিয়া কার্নিভাল মিনিভ্যানের দ্বিতীয় সারির সিট পুরোপুরি খুলে রাখা যায়।
  • গাড়িটির তৃতীয় সারির সিট ভাজ করে পুরোপুরি গাড়ির ফ্লোরের ভেতর ঢুকিয়ে ফেলা যায়। 
  • চালক ও সামনের সিটের যাত্রীর আরামের কথা বিবেচনায় সিটে হিটিং ও কুলিং ফাংশন রয়েছে। আরো আছে হিটেড স্টিয়ারিংয়ের ব্যবস্থাও।
  • দ্বিতীয় সারির মাঝের সিটকে চাইলে ভাজ করে টেবিলে রূপান্তরিত করা যায়।

প্রযুক্তি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা

  • ওয়্যারলেস এপল কারপ্লে, এন্ড্রয়েড অটো কানেকশন সম্বলিত  ৮ ইঞ্চি ড্যাশবোর্ড টাচস্ক্রিন রয়েছে গাড়িটিতে।
  • যাত্রীদের সুবিধার্থে রয়েছে ৯টি ইউএসবি পোর্ট।
  • গাড়ি রিভার্সে নেয়ার সময় পেছনের ব্লাইন্ড স্পটের অবস্থা সম্পর্কে অডিও ও ভিস্যুয়াল এলার্ট দিতে গাড়িটির পেছনে কোনায় রয়েছে বিশেষ রাডার। 
  • ড্রাইভিং ও পার্কিং এর সুবিধার্থে গাড়ির চারপাশে মোট ৪টি হাই রেজ্যুলিউশনের ক্যামেরা লাগানো আছে। 
  • রাস্তায় লেন বদলানো কিংবা প্যারালাল পার্কিং এর সময় যে কোন ধরনের সংঘর্ষ বা ধাক্কা এড়াতে চালককে সতর্ক করতে পারে গাড়িটির উন্নত প্রযুক্তি।
  • যাত্রীর সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য বিশেষ স্লাইডিং ডোরে অটো লকের ব্যবস্থা রয়েছে। এমনটা হয় যখন পেছন থেকে কোন গাড়ি আসে এবং সেটা কার্নিভাল গাড়ির দরজায় থাকা সেন্সর শনাক্ত করতে পারে। 
  • অনাকাঙ্ক্ষিত কোন সংঘর্ষ এড়াতে গাড়িটিতে রাখা হয়েছে অটোমেটিক ব্রেকের ব্যবস্থা।
  • চালকের ড্রাইভিংয়ে ধরনে কোন অসামঞ্জস্যতা থাকলে তা শনাক্ত করতে পারে গাড়িটির উন্নত প্রযুক্তি। ড্রাইভিংয়ে কোন প্রকার অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করলে অডিও ও পপ-আপ মেসেজ আকারে চালককে বিরতি নেয়ার জন্য এলার্ট করতে পারে এটি। 
  • হেডলাইট জ্বলন্ত অবস্থায় সামনে থেকে আরেকটি গাড়ি হেডলাইট জ্বালিয়ে আসতে থাকলে চালকের চোখে প্রতিফলিত হয়ে দূর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। এই জন্য সামনে থেকে আসা আরেকটি গাড়ির হেডলাইট শনাক্ত করতে পারলে নিজের হেডলাইট অটোমেটিক বন্ধ করে দেয়।

জ্বালানি

  • মিনিভ্যানটির জ্বালানি ক্ষমতা ব্যস্ত শহরে ১৯ mpg এবং হাইওয়েতে ২৬ mpg। সমন্বিত ভাবে এই হিসাব ২২ mpg।
  • প্রতি ১০০ কিলোমিটারে ৫.৮ লিটার থেকে ৯.৬ লিটার পর্যন্ত জ্বালানি খরচ হতে পারে এতে।

৫. Toyota Prius Prime

Toyota Prius Prime

ডিজাইন ও স্টাইলিং

  • Prius Prime-এর ডিজাইন অত্যন্ত স্লিক এবং অ্যারোডাইনামিক, যার মধ্যে রয়েছে তীক্ষ্ণ বডি লাইন, স্লিক হেডলাইট এবং শক্তিশালী বাম্পার, যা গাড়িটিকে আকর্ষণীয় এবং ভবিষ্যৎমুখী করে।
  • ইন্টেরিয়রের ক্ষেত্রে, Toyota Prius Prime-এ ব্যবহার করা হয়েছে টেকসই উপকরণ এবং আধুনিক প্রযুক্তি, যা যাত্রীদের জন্য আরামদায়ক এবং স্টাইলিশ একটি অভিজ্ঞতা প্রদান করে।
  • গাড়ির LED লাইটিং সিস্টেম, বিশেষ করে হেডলাইট এবং টেললাইট, এটিকে আরও আধুনিক লুক দিতে সাহায্য করেছে। যা দেখলে যে কেউই অবাক হবে।

পারফরম্যান্স

  • এর মোট শক্তি আউটপুট প্রায় ১২১ হর্সপাওয়ার, যা এর হাইব্রিড সিস্টেমের মাধ্যমে তৈরি হয়, যেখানে ইলেকট্রিক মোটর এবং গ্যাসোলিন ইঞ্জিন একসঙ্গে কাজ করে।
  • Toyota Prius Prime একটি প্লাগ-ইন হাইব্রিড গাড়ি, যা বৈদ্যুতিক এবং গ্যাসোলিন উভয় শক্তিতে চলতে সক্ষম।
  •  Prius Prime শুধুমাত্র বৈদ্যুতিক শক্তিতে প্রায় ২৫ মাইল পর্যন্ত চলতে পারে, যা শহরের ভ্রমণের জন্য যথেষ্ট সুবিধাজনক।
  • এর হাইব্রিড মোডে প্রায় ৫৪ মাইল প্রতি গ্যালন (MPG) এবং বৈদ্যুতিক ও গ্যাসোলিন মিলিয়ে প্রায় ১৩৩ MPGe জ্বালানি কার্যক্ষমতা রয়েছে।
  • ০ থেকে ৬০ মাইল প্রতি ঘণ্টা গতি তুলতে প্রায় ১০.৩ সেকেন্ড সময় নেয়।

আরাম ও সুবিধা

  • গাড়িটিতে ডুয়াল-জোন ক্লাইমেট কন্ট্রোল রয়েছে, যা চালক এবং যাত্রীরা আলাদাভাবে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, ফলে সবার জন্য আরামদায়ক অভিজ্ঞতা হয়।
  • ৩টি ভাগে বিভক্ত এয়ার কন্ডিশন সিস্টেমে সামনের সারি, মাঝের সারি এবং একদম পেছনের সারিতে আলাদা আলাদা তাপমাত্রা সেট করা যায়।
  • গাড়িটিতে রয়েছে একটি বড় টাচস্ক্রিন ডিসপ্লে যা নেভিগেশন, অডিও এবং অন্যান্য সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে, যা ড্রাইভিংকে আরও সহজ করে।

প্রযুক্তি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা

  • Toyota Prius Prime-এ প্লাগ-ইন হাইব্রিড (PHEV) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যা বৈদ্যুতিক এবং গ্যাসোলিন ইঞ্জিনের মিশ্রণে আরও জ্বালানি সাশ্রয়ী করে তোলে।
  • Prius Prime-এর EV মোড শুধুমাত্র বৈদ্যুতিক শক্তিতে চলার সুবিধা দেয়, যা স্বল্প দূরত্বের জন্য ব্যবহার করলে জ্বালানি ব্যয় প্রায় শূন্যে নেমে আসে।
  • গাড়িতে Toyota Safety Sense নামে একটি উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে, যা প্রি-কলিশন সিস্টেম, লেন ডিপার্চার অ্যালার্ট এবং ডায়নামিক রাডার ক্রুজ কন্ট্রোলের মতো সুরক্ষা ফিচার দেয়।
  • অ্যাডাপটিভ ক্রুজ কন্ট্রোল প্রযুক্তি ড্রাইভিংকে আরও স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলে, যা সামনের গাড়ির গতির সাথে গতি সমন্বয় করতে সক্ষম।
  • এই প্রযুক্তি গাড়িটিকে লেনের মধ্যে রাখতে সহায়তা করে, যা ড্রাইভিংয়ের সময় দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমায়।
  • গাড়িতে ব্লাইন্ড স্পট মনিটরিং সিস্টেম রয়েছে, যা ড্রাইভারকে অদৃশ্য বা দেখা না যাওয়া যানবাহনের অবস্থান সম্পর্কে সতর্ক করে।
  • এটি রিভার্স করার সময় গাড়ির পিছনে থাকা যানবাহন সম্পর্কে ড্রাইভারকে সতর্ক করে, যা পার্কিংকে নিরাপদ করে তোলে।
  • Prius Prime-এর হেডলাইট স্বয়ংক্রিয়ভাবে হাই বিমে পরিবর্তিত হয় এবং সামনে থাকা গাড়ি শনাক্ত করলে তা নিম্ন করে ফেলে, যা রাত্রিকালীন ড্রাইভিং আরও নিরাপদ করে।
  •  উন্নত টাচস্ক্রিন ইন্টারফেস ব্যবহার করে গাড়ির নেভিগেশন, অডিও এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত ফিচার নিয়ন্ত্রণ করা যায়, যা ড্রাইভিং অভিজ্ঞতাকে আরও সহজ এবং উপভোগ্য করে তোলে।

জ্বালানি

  • গাড়িটি প্রতি গ্যালনে প্রায় ৫৪ মাইল পর্যন্ত দিতে পারে, যা হাইব্রিড গাড়ির মধ্যে অন্যতম সেরা জ্বালানি দক্ষতা হিসেবে বিবেচিত।
  • Prius Prime সহজেই প্লাগ-ইন করে চার্জ করা যায়, এবং পুনরায় ইলেকট্রিক মোডে যাত্রা শুরু করা যায়, যা আবারও জ্বালানির ব্যবহার কমায়।
  • Prius Prime-এ একটি ইকো মোড রয়েছে, যা ইঞ্জিনের কার্যকারিতা এবং এয়ার কন্ডিশনিং পরিচালনা করে জ্বালানি খরচ কমাতে সাহায্য করে। 
  • Prius Prime-এর হাইব্রিড এবং বৈদ্যুতিক প্রযুক্তি দীর্ঘমেয়াদে জ্বালানি সাশ্রয় করে এবং জ্বালানির উপর খরচ কমিয়ে মালিকদের অর্থ সাশ্রয় করতে সাহায্য করে।

শেষ কথা

২০২৪ সালের সেরা কিছু হাইব্রিড সম্পর্কে আলোচনা করে আমরা বুঝতে পারি যে, এগুলো পরিবার এবং যাতায়াতের জন্য অত্যন্ত সুবিধাজনক। আধুনিক প্রযুক্তি, উন্নত সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং আরামদায়ক অভ্যন্তরীণ স্থান এই মিনি ভ্যানগুলির প্রধান বৈশিষ্ট্য। যেকোনো ধরনের ভ্রমণ বা দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য সেরা সঙ্গী হতে পারে এগুলি। আশা করি, আমাদের আলোচনা আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে। যেকোনো প্রয়োজনের জন্য সঠিক মিনি ভ্যান চয়ন করা, আপনার জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে এবং পরিবারের সঙ্গে আনন্দময় ভ্রমণের অভিজ্ঞতা প্রদান করবে।

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    Share your vote!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top