গাড়ির টোল এবং জ্বালানি খরচ কমাতে জিপিএস ট্র্যাকারের ভূমিকা
পড়তে লাগবে: 3 মিনিট

গাড়ির টোল এবং জ্বালানি খরচ কমাতে জিপিএস ট্র্যাকারের ভূমিকা

বাংলাদেশে একসাথে অনেকগুলো গাড়ি ম্যানেজ করা সত্যিই ঝামেলার। টোল চার্জ আজ একরকম, কালই আবার বেড়ে গেলো। রাস্তায় জ্যাম থাকায় বারবার ভিন্ন ভিন্ন রুট নিতে হয়। তার ওপর ফুয়েলের দামও যেকোনো সময় বেড়ে যেতে পারে। ফলে গাড়ি অতিরিক্ত কত কিলোমিটার গেল বা কতক্ষন থেমে ছিল এসব কিছুই আপনার খরচ বাড়িয়ে দেয়। এই লুকানো খরচগুলো ধীরে ধীরে আপনার প্রফিটে কাট ডাউন করে। তাই এখন অনেক প্রতিষ্ঠান জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেম ব্যবহার করছে।

প্রহরী দেশের বিভিন্ন ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি, রেন্ট-এ-কার সার্ভিস, আর ডেলিভারি ফ্লিটের সাথে কাজ করেছে। প্রহরী দেখায় কীভাবে জিপিএস ট্র্যাকিং ব্যবহার করে টোল ও ফুয়েল খরচ কমিয়ে ফেলা যায়, সেই সাথে গাড়ি বিষয়ক নিরাপত্তা ও জবাবদিহিতাও বেড়ে যায়। আজকের এই ব্লগে আমরা জানবো গাড়ির টোল এবং ফুয়েল খরচ কমাতে জিপিএস ট্র্যাকারের ভূমিকা।

ফ্লিট মেইনটেনেন্সের আসল খরচ কোথায় লুকিয়ে থাকে?

খরচ কমাতে চাইলে আগে জানতে হবে, আসলে খরচগুলো কোথা থেকে আসছে। ফ্লিট ম্যানেজমেন্টে খরচ শুধু ফুয়েল বা ট্যাক্সেই শেষ নয়—এর পেছনে আরও অনেক লুকানো খরচ লুকিয়ে থাকে।

  • দীর্ঘ রুটে অপ্রত্যাশিত টোল চার্জ
  • যানজটে আটকে থাকা বা ডেলিভারি পয়েন্টে অতিরিক্ত সময় থাকা
  • অনুমতি ছাড়া ফুয়েল ভর্তি করা বা ফুয়েল চুরি হওয়া
  • বেপরোয়া ড্রাইভিং বা ভুল রুটের কারণে মেইনটেনেন্স খরচ বেড়ে যাওয়া
  • কোম্পানির গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার

এই খরচগুলোর সঠিক হিসাব রাখা কঠিন, কারণ বেশিরভাগ সময় ড্রাইভারের মুখের রিপোর্ট বা হাতে লেখা লগবুকে নির্ভর করতে হয়। আর সেগুলো সবসময় নির্ভুল হয় না।

সাধারণ বনাম প্রফেশনাল জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেম

Google Maps বা WhatsApp Live Location ঠিকই দেখায় ফোন কোথায় আছে, কিন্তু এগুলো তৈরি হয়েছে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য-ফ্লিট ম্যানেজমেন্টের জন্য নয়। একটা প্রফেশনাল GPS ট্র্যাকিং সিস্টেম সরাসরি গাড়ির সাথে সংযুক্ত হয় এবং সেখান থেকে তথ্য পাঠায় নিরাপদ সার্ভারে, যেটা আপনি মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে রিয়েল-টাইমে দেখতে পারেন।

প্রহরীর GPS Tracking for Fleet Owners সিস্টেমে আপনি যা যা পারবেনঃ

  • একসাথে সব গাড়ি এক ম্যাপে দেখতে
  • অনুমোদিত এলাকা ছাড়ালে সঙ্গে সঙ্গে অ্যালার্ট পেতে
  • স্পিড, স্টপেজ, আর আইডল টাইম ট্র্যাক করতে
  • ফুয়েল ব্যবহার ও চুরি মনিটর করতে
  • অনুমতি ছাড়া গাড়ি চালু হলে দূর থেকে ইঞ্জিন বন্ধ করতে (সাপোর্টেড মডেল অনুযায়ী)
  • দিন, সপ্তাহ বা মাস অনুযায়ী ট্রিপ হিস্ট্রি দেখতে

অর্থাৎ, জিপিএস ট্র্যাকার দিয়ে শুধু “লোকেশন দেখা” ছাড়াও আরও দরকারি ইনসাইট এবং তথ্য এখন পাওয়া সম্ভব।

কীভাবে জিপিএস ট্র্যাকিং টোল ও ফুয়েল খরচ কমায়

১. স্মার্ট রুট প্ল্যানিংঃ প্রতিটি গাড়ির যাত্রাপথ জিপিএস ট্র্যাকার দিয়ে রেকর্ড করা থাকে। এই ডেটা বিশ্লেষণ করে আপনি দেখতে পারবেন কোন রুটে কম জ্যাম, কোন রাস্তায় খরচ কম।এভাবে আপনি পরের ট্রিপের জন্য সাশ্রয়ী রুট বেছে নিতে পারবেন, ফলে ফুয়েল ও টোল দুটোতেই সেভ হবে।

২. জিও-ফেন্সিং দিয়ে অননুমোদিত রুট বন্ধঃ জিও-ফেন্স মানে হলো আপনি একটি ডিজিটাল সীমা ঠিক করে দেন যেটার বাইরে গেলে সঙ্গে সঙ্গে অ্যালার্ট পাবেন। এতে ড্রাইভার অনুমতি ছাড়া অন্য রাস্তায় যেতে পারবে না বা অপ্রয়োজনীয় থামা কমে যাবে, ফলে খরচও কমবে।

৩. আইডল টাইম কমানোঃ গাড়ি পার্ক অবস্থায় ইঞ্জিন চালু রাখলে ফুয়েল তো নষ্ট হয়ই, গাড়ির ইঞ্জিনেও বাড়তি চাপ পড়ে। GPS রিপোর্ট থেকে জানা যায় কোন গাড়ি কত সময় আইডল থাকে। এরপর আপনি ড্রাইভারদের ট্রেন করতে পারেন যেন অপেক্ষার সময় ইঞ্জিন বন্ধ রাখে।

৪. ড্রাইভিং বিহেভিয়ার মনিটর করাঃ হঠাৎ ব্রেক, হঠাৎ গতি বাড়ানো বা বেশি স্পিডে চালানো এসব অভ্যাসে ফুয়েল খরচ বাড়ে। জিপিএস ট্র্যাকারের রিপোর্টে এসব আচরণ দেখা যায়, তাই ড্রাইভারদেরকে সচেতন করে নির্ধারিত গতিতে ড্রাইভিংয়ের মাধ্যমে ফুয়েল বাঁচানো যায়।

৫. ফুয়েল চুরি শনাক্ত করাঃ প্রহরীর কিছু অ্যাডভান্সড ট্র্যাকার ফুয়েল সেন্সরের সাথে যুক্ত হয়ে কাজ করে। ফুয়েলের লেভেল হঠাৎ কমে গেলে সঙ্গে সঙ্গে অ্যালার্ট দেয়। এতে ফুয়েল চুরি ঠেকানো সহজ হয় এবং কোন গাড়ি অকারণে বেশি ফুয়েল খরচ করছে, তা বোঝা যায়। এই সব ফিচার একসাথে কাজ করে আপনার দৈনন্দিন বড় খরচ—টোল ও ফুয়েল দুটোকেই উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেয়।

খরচ কমানো ছাড়াও জিপিএস ট্র্যাকিংয়ের কিছু সুবিধা

জিপিএস ট্র্যাকিং শুধু খরচ বাঁচানোর জন্য নয়, বরং পুরো ব্যবসাকে আরও সংগঠিত করে তোলে।

  • কাস্টমার সার্ভিস ভালো হয়: রিয়েল-টাইম ট্র্যাকিংয়ে সঠিক আগমনের সময় জানানো যায়।
  • গাড়ি চুরি হলে দ্রুত উদ্ধার: লাইভ ট্র্যাকিং পুলিশের কাজে সহায়তা করে।
  • ইনস্যুরেন্সে ছাড় পাওয়া যায়: অনেক কোম্পানি GPS ট্র্যাকার থাকা গাড়ির জন্য ডিসকাউন্ট দেয়।
  • রক্ষণাবেক্ষণ সহজ হয়: ট্রিপ হিস্ট্রোরি দেখে বোঝা যায় কোন গাড়ির সার্ভিসিং দরকার।
  • ড্রাইভারদের জবাবদিহিতা বাড়ে: জানে যে তাদের কার্যকলাপ দেখা হচ্ছে, তাই দায়িত্বশীলভাবে চালনা করে।

সব মিলিয়ে, জিপিএস ট্র্যাকিং মানে শুধু খরচ কমানো নয় এটি যেন ব্যবসা বাড়ানোর স্মার্ট স্ট্র্যাটেজি।

প্রহরী যেভাবে ফ্লিট মালিকদের জন্য জিপিএস ট্র্যাকিং সহজ করেছে অনেকেই ভাবেন জিপিএস ট্র্যাকার ইনস্টল বা ম্যানেজ করা ঝামেলার। কিন্তু প্রহরী সেটাকে করেছে একদম ঝামেলামুক্ত—

  • প্রশিক্ষিত টেকনিশিয়ানদের মাধ্যমে দ্রুত ইনস্টলেশন, দেশের যেকোনো জায়গায়
  • বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষায় সহজ ড্যাশবোর্ড—লাইভ ট্র্যাকিং, অ্যালার্ট ও রিপোর্টসহ
  • ছোট-বড় ফ্লিট, রেন্টাল কার বা ডেলিভারি ভ্যান সব ধরনের ব্যবসার জন্য কাস্টম প্যাকেজ
  • ঢাকায় অবস্থিত লোকাল সাপোর্ট টিম, ট্রেনিং ও আফটার-সেলস সার্ভিসসহ

প্রহরী বাংলাদেশের পরিবেশ অনুযায়ী তৈরি, তাই কম সিগন্যাল এলাকাতেও কানেকশন ঠিক থাকে। কেউ ডিভাইস বন্ধ করতে গেলে সাথেসাথে টেম্পার অ্যালার্ট চলে আসে।

জিপিএস ট্র্যাকার থেকে সুবিধা পাওয়ার টিপস

  • ড্রাইভারদের সচেতন করুন: ট্র্যাকিং তাদেরও সুরক্ষা দেয় সঠিক লগ থাকলে ভুল বোঝাবুঝি হয় না।
  • রিপোর্ট রিভিউ করুন: সাপ্তাহিক রিপোর্টে ফুয়েল, আইডল টাইম, টোল খরচ সব বিশ্লেষণ করুন।
  • অ্যালার্ট ব্যবহার করুন: রুট থেকে বিচ্যুতি বা অতিরিক্ত আইডল টাইম হলে নোটিফিকেশন সেট করুন।
  • ডেটাকে কাজে লাগান: ডেলিভারি প্ল্যান, বিলিং বা কোটেশনে প্রহরীর ডেটা ব্যবহার করুন।

মনে রাখবেন, জিপিএস ট্র্যাকার কেবল ততটাই কার্যকর যতটা আপনি সেটাকে ব্যবহার করছেন। নিয়মিত মনিটরিং মানেই সেভিংস।

শেষ কথা

ডেটা ছাড়া ফ্লিট চালানো মানে চোখ বেঁধে গাড়ি চালানো। বাড়তে থাকা ফুয়েল দাম, অপ্রত্যাশিত টোল চার্জ আর অনুমতি ছাড়া ট্রিপ এসবই নিঃশব্দে প্রফিট কমিয়ে দেয়। প্রহরী জিপিএস ট্র্যাকার আপনাকে দেয় – রিয়েল-টাইম ট্র্যাকিং, রুট হিস্ট্রি, ফুয়েল মনিটরিং, জিও-ফেন্সিং এর মতো ফিচারস।
প্রহরীর মানে শুধু গাড়ি ট্র্যাকিং নয়, সাথে আছে স্মার্ট আর নিরাপদ ফ্লিট ম্যানেজমেন্ট। তাই আজই প্রহরীর জিপিএস ব্যবহার করে টোল আর ফুয়েল খরচ কমাতে কাজ শুরু করুন।

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    আপনার ভোট শেয়ার করুন!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top