বিশ্ব যখন এক মহাসংকটে তখন অর্থনীতিতে ও নেমে এসেছে বিপর্যয়। বিশ্বনেতেরা ভাবছেন নিজেদের দেশের অর্থনৈতিক সংকট কি ভাবে কাটিয়ে উঠা যায়। একেক রাষ্ট্রনেতা একেক পলিসি গ্রহন করে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন। আসলে সব মানুষই যখন বিপর্যয়ে তখন কার উপর কে নির্ভর করবে! নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য হাতের নাগালে রাখাটাই বড় চ্যালেঞ্জিং। ভারসাম্য রক্ষা করতে আলোচনা সমালোচনার যেন শেষ নেই। ঠিক এমন মুহূর্তে গাড়ির বার্ষিক করের উপর পড়লো কিছুটা বাড়তি বোঝা। বাড়ছে গাড়ির ট্যাক্স ।
কবে থেকে বাড়বে?
আগামী অর্থবছরে গাড়ির বার্ষিক কর বাড়তে যাচ্ছে ৫০-৬৭% পর্যন্ত! তবে এই করের অংশ নির্ভর করবে গাড়ির মডেল এবং ইঞ্জিন ক্যাপাসিটির উপর। Bangladesh Road Transport Authority 1984 সালের কর আইন অনুযায়ী গাড়ির মালিকদের থেকে আগাম আয়কর গ্রহন করে,যখন গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন করতে যাওয়া হয় কিংবা ফিটনেস রিনিওয়াল করা হয়! আগামী অর্থবছরে গাড়ির নিবন্ধন ব্যয় বাড়ানো হবে। গাড়ির ইঞ্জিনের ধারণক্ষমতা এবং গাড়ির মডেলের ধরনের ওপর নতুনভাবে অগ্রিম কর নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাব গৃহীত হলে জুলাই মাস থেকেই গাড়ির মালিকদের গুনতে হবে বাড়তি খরচ।
কোন গাড়ির টাক্স কত বাড়বে?
আর এই আয়করই বাড়ছে ৫০-৬৭% পর্যন্ত। আগামী ১ জুলাই থেকে তা কার্যকর হওয়ার কথা হয়েছে।
আগে 1500 CC গাড়িতে বার্ষিক আয়কর ছিলো ১৫,০০০ কিন্তু এখন তা বেড়ে ২৫,০০০!
2000CC গাড়ির জন্য বার্ষিক আয়কর দিতে হতো ৩০,০০০ এখন দিতে হবে ৫০,০০০
2500 CC পর্যন্ত গাড়ির জন্য দিতে হতো ৫০,০০০ হাজার এখন দিতে হবে ৭৫,০০০
3000 CC পর্যন্ত ছিলো ৭৫,০০০ তবে এখন ১,২৫,০০০ টাকা দিতে হবে।
3500 CC থেকে উপরের সব গাড়ির জন্য ২ লাখ।
উল্লেখ্য ৬৭% বেড়েছে 1500CC তে, যা কিনা মধ্যবিত্ত ও নিন্ম বিত্তরাই ব্যবহার করে বেশি! তাদের এখন ১৫,০০০ হাজার এর বদলে দিতে হবে ২৫,০০০ টাকা। প্রতি বছর দিতে হবে এই আয়কর।
কেন বাড়ছে গাড়ির ট্যাক্স?
নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ব্যতীত সব ধরনের বিলাসবহুল পণ্যে আয়করের পরিমান বাড়িয়ে রাজস্ব বাড়ানোর পরিকল্পনারই অংশ এটি। বিলাসবহুল পণ্যে যারা ব্যবহার, তাদের উপর আয়কর পড়ছে বেশি। যারা নিজেদের শখ মেটাতে চান, দেশের আইন অনুযায়ী তাদেরকে গুনতে হবে বাড়তি অর্থ! তাই বাড়ছে গাড়ির ট্যাক্স ।
হঠাৎ করে গাড়ির ৫০-৬৭% বার্ষিক আয়কর বেড়ে উঠা নিয়ে চলছে অনেক তর্ক বিতর্ক। 1500 CC গাড়ি যা কিনা মধ্যবিত্ত ও নিন্মমধ্যবিত্তরা ব্যবহার করে তাদের জন্য বছরে ২৫,০০০ হাজার টাকা কর দেয়া অনেক ক্ষেত্রে হয়ে উঠতে পারে কষ্ট সাধ্য। এ ছাড়াও বিলাসবহুল গাড়ি মালিকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়বে, যদি ১লা জুলাই থেকে তা কার্যকর হয়ে উঠে।
মধ্যবিত্ত শ্রেণীর দুশ্চিন্তা
বাঙ্গালী মধ্যবিত্ত শ্রেণী অর্থনৈতিক দিক থেকে যখন সমৃদ্ধ হচ্ছে তখন তাদের জীবন যাত্রার পরিবর্তনে গাড়ি স্থান করে নিতে শুরু করেছে। কিছুটা আর্থিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আর একটু উন্নত জীবনের আকাঙ্খায় যখন গাড়ি কিনতে তৎপর, কিংবা করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে পাবলিক ট্রান্সপোর্টের পরিবর্তে নিজেদের পার্সোনাল গাড়ির কথা ভাবছেন তখনই গাড়ির উপর বার্ষিক আয়কর বৃদ্ধি অনেকের উৎসাহ কমিয়ে ফেলবে এমনটাই মনে করছে গাড়ি বিক্রেতা সংগঠনের নেতারা। তারা আরো বলছেন গাড়ির দাম এমনিতেই বাড়বে আগামীদিনে,তার উপর এই বাড়তি গাড়ির ট্যাক্স আগ্রহ কমাবে গাড়ির প্রতি।
সরকারের পক্ষ থেকে তা বিবেচনা করার জন্য দাবি সংগঠনের নেতৃবৃন্দের। উল্লেখ্যে যে BRTA এর তথ্য মতে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৫.৪ লাখ গাড়ি রেজিস্ট্রেশনের আওতাভুক্ত রয়েছে।
বাজেটে খরচ বেড়ে গেলেও, গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ ও মনিটরিং এর খরচ কমানোর একটা উপায় কিন্তু আছে। প্রহরী ভেইক্যাল ট্র্যাকিং সার্ভিস! প্রহরী ব্যবহার করলে কমবে গাড়ি মেন্টেইনেন্স খরচ এবং সময়।