শীতকালে অনেকের জন্য আনন্দের হলেও কিছু মানুষের জন্য অনেক বেশী পীড়াদায়ক। আর আপনার যদি নিজস্ব গাড়ি, ট্রাক বা অন্য যানবাহন থাকে তাহলে তো কথাই নেই। আপনার গাড়ির পরিষ্কার থেকে শুরু করে বিভিন্ন পার্টসের যত্ন নিতেও নিশ্চই হিমশিম খেতে হয় শীতকালে। অনেক বেশী ঠাণ্ডা পড়লে গাড়ির ব্যাটারি বা ব্রেক খুব সহজেই বসে যায়। আমাদের দেশেও ইদানিং খুব শীত পড়ছে। তাপমাত্রার ওঠানামা হচ্ছে অনেক। আজকের লেখায় আমরা জানাব শীতকালে গাড়ির কোন ৫টি পার্টসের সমস্যা বেশী হয় এবং কোন কোন পার্টসগুলো রিপেয়ার করে নিলে ভাল।
হিটিং সিস্টেম ফেইলিওর
সাধারণত হিটিং সিস্টেম আমরা শুধুমাত্র ঠাণ্ডা আবহাওয়া ও শীতকালেই ব্যবহার করে থাকি। শীতকালে গাড়ির যেকোন পার্টস যত সচল রাখা হয় ততই সেগুলো ভালো থাকে, এটা তো সবাই জানেন। হিটিং সিস্টেমের ব্যবহার সারা বছর অনেক কম হয়, যার ফলে এগুলো ঠিক রাখা দুস্কর হয়ে পড়ে। বেশীরভাগ গাড়ি,ট্রাক এবং এসইউভি গাড়িগুলোর হিটিং সিস্টেম দুটি পার্টসের সাহায্যে চলে। একটি হলো ইঞ্জিন কুলেন্ট সিস্টেম আরেকটি হলো কেবিন এয়ার সার্কুলেশন সিস্টেম । দক্ষতা বাড়াতে দুটি পার্টস একসাথে কাজ করে। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় ময়লা বা ভাঙ্গা রেডিয়েটরের কারনে হিটিং সিস্টেম আটকে যায় বা ফেইলিওর হয় । এছাড়াও ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হয়ে গেলে তো ইঞ্জিনের মারাত্মক ক্ষতি হয়ই সাথে ঘটতে পারে এই বিপত্তিও । কাজেই আপনার গাড়ির এ ধরনের সমস্যায় অবিলম্বে গাড়ির হিটিং অংশটি খুঁজে বের করুন এবং অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ মেকানিকের শরনাপন্ন হোন।
উইন্ডশিল্ড ওয়াইপার মোটরের পরিবর্তন
বর্তমানে আবহাওয়ার কোন ঠিক ঠিকানা নেই। আজকাল তো শীতকালেও বৃষ্টি হতে দেখা যায়। হ্যাঁ, সেটা অবশ্য অন্য কথা ইউরোপ আমেরিকা তুষার ঝড় হয়। বাংলাদেশে কুয়াশা বেশী পড়লে তখন উইন্ডশিল্ড পরিষ্কার করে রাখাটা প্রয়োজন হয়ে পড়ে। আর তখনি উইন্ডশিল্ডের ওয়াইপারটি বেশী ব্যবহৃত হয়। উইন্ডশিল্ড ওয়াইপারে দুটি আলাদা গিয়ার থাকে যার মাধ্যমে আলাদা করে শক্তি সরবরাহ হয় এবং ওয়াইপারগুলো চলে। উইন্ডশিল্ডের একটি সুইচ থাকে যার মাধ্যমে ওয়াইপারগুলো অন/অফ করা হয়। শীতকালে গাড়ির ওয়াইপারগুলো সচল রাখতে মোটরগুলো আগে থেকেই পরীক্ষা করবেন এবং প্রয়োজনে পাল্টে ফেলবেন।
উইন্ডশিল্ড ওয়াশার ট্যাংক পরিবর্তন
উইন্ডশিল্ড ওয়াশারের ভেতর যে ফ্লুয়িড ব্যবহার করা হয় সেগুলো মূলত বানানো হয় ঠাণ্ডা আবহাওয়ার জন্য । তাপমাত্রা যখন সর্বোচ্চ বিশ আর সর্বনিম্ন শুন্য থাকে তখন এই ফ্লুয়িড ব্যবহার করা হয়। সাধারণ মানুষ উইন্ডশিল্ড ওয়াশার ট্যাংকে পানি দিয়ে ভর্তি করে রাখে। এভাবে ভর্তি করার কারণেই উইন্ডশিল্ড ওয়াশার ট্যাংকের ফেইলিওর ঘটে। যখন শীতকাল আসে তখন ট্যাংকের ভেতরের ফ্লুয়িডও জমে শক্ত হয়ে যায় । যার ফলে ট্যাংকটি ভেঙ্গেও যেতে পারে। যা পরবর্তীতে ফ্লুয়িড লিকের কারণ হয়। আর এই কারনে অবশ্যই শীতকালে গাড়ির উইন্ডশিল্ড ওয়াশার ট্যাংক বদলে নেবেন।
অয়েল কুলার লাইন পরিবর্তন
অয়েল কুলার লাইন শীতকালে ভেঙ্গে যাওয়া বা ফেটে যাওয়ার একটি সম্ভাবনা থাকে। যদিও সবসময় এমনটা ঘটে না। কিন্তু আপনার গাড়ির লাইনের তারগুলো যদি ধাতুর তৈরি হয়। তাহলে সেগুলো নষ্ট হবার সম্ভাবনা খুব কম থাকে। তারগুলো মূলত ঠাণ্ডার কারনে নষ্ট হয়না, অনেক সময় ভেতরের ছোট সুতার মত তারগুলো ক্ষয় হয়ে যাওয়ার কারনে পুরো লাইনটি নষ্ট হয়ে যায়। এই তারের লাইনগুলো বেশী নষ্ট হয় যেসব দেশে বেশী শীত পড়ে। যখন ইঞ্জিন অন করা হয় তখন গাড়ির থেকে নিচের অংশে ঝুলে থাকা তারগুলো ঘষা লেগে একদম জীর্ণ হয়ে যায়। এভাবে ঘর্ষণের ফলে অতিরিক্ত তাপমাত্রার উৎপন্ন হয় যা পরবর্তীতে লাইনে লিকেজের সৃষ্টি করে। শীতকালে গাড়ির এসব লাইন চেক করবেন এবং পরিবর্তন করে নেবেন ।
শীতকালে গাড়ির হেডলাইটের বাল্ব পরিবর্তন
হেডলাইটের বাল্ব এমন যন্ত্রাংশ, যেগুলো নষ্ট হবার আগেই পরিবর্তন করে ফেলবেন। কখনো চিন্তা করবেন না আগে নষ্ট হোক তারপর দেখা যাবে। যখনই দেখবেন আলো একটু ক্ষীণ হয়ে আসছে সাথে সাথেই ভেতরে বাল্ব চেক করে নেবেন অথবা পাল্টে নেবেন। যখন দেখবেন হেডলাইটের সামনে হালকা ফাটল বা রাবারের সিল ছেঁড়া, তখন প্রাথমিকভাবে আপনি বুঝতে পারবেন যে বাল্ব চেঞ্জ করার সময় হয়েছে। যদি এমন কিছু হয় তাহলে হেডলাইটের ভেতর পানির লিকেজও হতে পারে। আর এসব কারনে হেডলাইটের ভেতরের বাল্ব ভেঙ্গেও যেতে পারে। অতিরিক্ত ঠাণ্ডা পড়লে হেডলাইটের রাবার সীলগুলো ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে। আর এটাই কারন বেশী শীতকালে গাড়ির হেডলাইটের বাল্ব পরিবর্তন করতে দেখা যায়।
শীতকালে গাড়ির পার্টসগুলো শক্ত হয়ে যায় তখন অনেকে গরম বাতাস দিয়ে পার্টসগুলো নরম করে নেয়। অনেকে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করে থাকে। এছাড়া শীতকালে গাড়ি নিয়ে অনেকে অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হন। গাড়ির বিভিন্ন পার্টস, পার্টসের সমস্যা-সমাধান, টিপস এন্ড ট্রিকস ব্লগ পড়তে চোখ রাখুন প্রহরীর ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেইজে। প্রহরী আপনার গাড়ির সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি প্রহরীর আছে ২০টির বেশী ফিচার। আর সপ্তাহে ৭দিন ২৪ ঘণ্টা দিয়ে থাকে কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস।