প্রহরী

পড়তে লাগবে: 3 মিনিট

কীভাবে একটি ভাল ভেইক্যাল ট্র্যাকিং ডিভাইস পছন্দ করবেন?

    Written By: Tanzina Ferdous

ফারহান (ছদ্মনাম) সাহেব দুটি সিএনজির মালিক। একদিনের ঘটনা। তাঁর এক সিএনজির ড্রাইভার সিএনজি রেখে চা পান করতে দাঁড়ায় রাস্তার পাশের একটি চায়ের দোকানে। এই সুযোগে চোরের দল এসে সিএনজিটি চুরি করে পালায়। সৌভাগ্যবশত ফারহান সাহেব তাঁর সিএনজিতে জিপিএস ট্র্যাকার ব্যবহার করতেন। সেই সুবাদে খুবই দ্রুত তিনি প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে সিএনজিটি উদ্ধার করতে সমর্থ হন।

অপরদিকে সাদিক (ছদ্মনাম) সাহেব কোভিড পরবর্তী সময়ে তাঁর বাচ্চাদের স্কুলে দেয়া নিয়ে খুব চিন্তায় পড়েছেন। কারন প্যান্ডেমিকের পর নতুন ড্রাইভার নিয়োগ দিয়েছেন তিনি। বাচ্চাদের নতুন ড্রাইভারের সাথে স্কুলে পাঠাতে ভরসা পাচ্ছিলেন না কোনোমতেই। তাই সিদ্ধান্ত নেন গাড়িতে জিপিএস ট্র্যাকার ব্যবহারের।

উপরের দুটি ঘটনা থেকেই জিপিএস ট্র্যাকার ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আমরা ধারণা পাই। এতো প্রয়োজনীয় একটি গ্যাজেট বাজারের হাজারো পণ্যের ভিড়ে কিভাবে বাছাই করতে হবে তা অবশ্যই ভাবনার বিষয়।

জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেমঃ

জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেমের কাজ মূলত যানবাহনের প্রকৃত অবস্থান নির্ণয় করা। একটি ভাল মানের জিপিএস সিস্টেমের সাথে নিম্নমানের জিপিএস এর পার্থক্য নির্ভর করে সার্ভারে তথ্য পাঠানোর ধরন, তথ্যের প্রকৃতি এবং এই তথ্য কিভাবে ব্যবহারকারীর কাছে পৌঁছাবে তার উপর। শুধুমাত্র একটি ভালো জিপিএস সিস্টেম সঠিকভাবে এই তথ্য ব্যবহারকারী পর্যন্ত পাঠাতে এবং গাড়ির সঠিক অবস্থান নির্ণয় করতে পারে।

আপনার গাড়ির জন্য ট্র্যাকিং ডিভাইস বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয় মাথায় রাখতে পারেন

রিয়েল টাইম ট্র্যাকিংঃ

একটি রিয়েল টাইম ট্র্যাকিং সিস্টেম কতটুকু কার্যকর এটা বোঝা যায় ‘ট্র্যাকিং টাইম ডিলে’ বা ডিভাইসটি কত সময় পরপর আপডেট দিচ্ছে তার উপর। সাধারণত একটি ভাল ট্র্যাকিং ডিভাইসের ক্ষেত্রে সময়টা ১০-১৫ সেকেন্ডের মধ্যেই হয়ে থাকে।

কতটুকু ব্যয়বহুলঃ

রিয়েল টাইম ট্র্যাকিং এর ক্ষেত্রে মাসিক চার্জ দিতে হয় বলে অনেকে এটাকে ব্যয়বহুল মনে করে। কিন্তু একটি মানসম্মত সেবার বিনিময়ে এই খরচটা আসলে খুব সহজে উসুল করা সম্ভব। একটি বৈধ এবং ভাল মানের ট্র্যাকিং সেবা পাওয়ার জন্য অবশ্যই একটি ভাল প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করতে হবে।

ব্যবসাক্ষেত্রেঃ

ফ্লিট ম্যানেজমেন্ট কিংবা ভাড়ায় চালিত গাড়ি প্রভৃতির জন্য গাড়ির অবস্থান সঠিকভাবে জানতে পারা খুব গুরুত্বপূর্ণ। একসাথে একাধিক গাড়ির অবস্থান নির্ণয় এবং যে কোন জায়গা থেকে গাড়ি সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে।

সঠিক তথ্য প্রদানের মাধ্যমে একজন ফ্লিট ম্যানেজার যে কোন জরুরি পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে এবং দুশ্চিন্তামুক্ত হয়ে প্রতিদিনের কার্যাবলী পরিচালনা করতে পারে।

এলার্ট সার্ভিসঃ

রিয়েল টাইম এলার্ট এবং নোটিফিকেশন খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ব্যক্তিগত এবং ফ্লিট ম্যানেজমেন্ট এ ২৪/৭ গাড়ির অবস্থান সম্পর্কে সচেতন থাকা সম্ভব এই এলার্ট সার্ভিসের মাধ্যমে। এই সুবিধা থাকলে সারাক্ষণ মনিটরে চোখ না রেখেও গাড়ির অবস্থান এবং চলাচল সম্পর্কে সজাগ থাকা সম্ভব।

এছাড়াও গাড়ির গতি প্রকৃতি, নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে যাওয়া, এসির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নজরদারিতে রাখা সহজ হয়।

মানসম্পন্ন ম্যাপিং সিস্টেমঃ

একটি মানসম্পন্ন ট্র্যাকিং সিস্টেমের ম্যাপে বিভিন্ন লেভেলে জুম করার সুবিধা থাকবে। এছাড়াও এতে স্ট্রিট ম্যাপ, স্যাটেলাইট ভিউসহ আলাদা আলাদা সুবিধা থাকবে। একটি ভাল জিপিএস সিস্টেম অবশ্যই একটি ভাল মানের আপডেটের সুবিধাসহ ম্যাপ প্রদান করবে।

ব্যাকআপ সুবিধাঃ

তথ্য ব্যাকআপের সুবিধা আছে কিনা এবং তা কতদিনের ও কিভাবে দেয়া হচ্ছে এগুলোর প্রতি নজর রাখতে হবে।

চুরি প্রতিরোধ ক্ষমতাঃ

চুরি প্রতিরোধ করার জন্য কি ধরনের প্রতিরোধ ব্যবস্থা আছে এবং তা কিভাবে কাজ করছে তা জানা জরুরি। যে কোন জরুরি মুহূর্তে জিপিএস সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান থেকে কিভাবে সাহায্য পাওয়া যেতে পারে সেটাও জেনে নিতে হবে।

হার্ডওয়্যার কোয়ালিটিঃ

জিপিএস ট্র্যাকিং এর ক্ষেত্রে ডিভাইসের মান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কারন বর্তমানে বাজারে প্রচুর নিম্নমানের ডিভাইস পাওয়া যাচ্ছে। একটি ট্র্যাকিং সেবা নেয়ার আগে আপনাকে যে বিষয়গুলোর প্রতি খেয়াল রাখতে হবে তা হল এটির মান এবং এটি পানি, ধুলা, তাপ ইত্যাদি প্রতিরোধী কিনা। যেমনঃ ‘প্রহরী’ বাংলাদেশে তৈরি একমাত্র ট্র্যাকিং ডিভাইস যেখানে এই সব সুবিধাগুলো রয়েছে।

জিইও ফেন্স-এর নিশ্চয়তাঃ

জিইও ফেন্স হল এমন একটি সুবিধা যার মাধ্যমে ম্যাপের মধ্যে নির্দিষ্ট এলাকা বাছাই করে দেয়া যায়। এবং এই এলাকার মধ্য থেকে বের হয়ে আসলে এলার্ট পাওয়া যায়।

এটি ফ্লিট ম্যানেজার এবং ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীদের জন্য বিশেষ করে স্কুলগামী বাচ্চাদের অভিভাবকদের জন্য খুবই দরকারি একটি সুবিধা।

সুবিধাজনক ইন্সট্যালেসন ও রক্ষণাবেক্ষণঃ

একটি জিপিএস ডিভাইস ইন্সট্যালেসন এবং এর রক্ষণাবেক্ষণ কিছু কিছু ক্ষেত্রে জটিল হতে পারে। ডিভাইস পরিচালনা করা অনেক ঝক্কির হতে পারে যদি এতে অধিক সংখ্যক সুইচ, চার্জিং এর ঝামেলা ইত্যাদি থাকে। তাই তুলনামূলক সহজ ইন্সট্যালেসন প্রক্রিয়া এবং প্রতিষ্ঠান থেকে এই বিষয়ক কি কি সহযোগিতা করা হবে তা জেনে নেয়া দরকার।

সহজবোধ্য রিপোর্ট এবং সামারিঃ

ড্যাসবোর্ড সামারি এবং ট্র্যাভেল হিস্টোরি সুবিধা একজন ফ্লিট ম্যানেজারের কাজ অনেক সহজ করে দেয়। এর সাহায্যে একাধিক গাড়ির উপর একই সাথে নজর রাখা সম্ভব। প্রতিষ্ঠানভেদে ট্র্যাভেল হিস্টোরি একমাস থেকে ছয়মাস পর্যন্ত হয়ে থাকে।

একটি জিপিএস সিস্টেম মোট দূরত্ব, অতিরিক্ত গতি, ট্রিপ ইত্যাদি নানা বিষয়ে তথ্য দিয়ে থাকে। এধরনের তথ্যগুলো কতটা সহজভাবে পাওয়া যাবে সে বিষয়টা খেয়াল রাখতে হবে।

 

এই বিষয়গুলো ছাড়াও একটি ভাল জিপিএস ট্র্যাকিং সেবা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের বিটিআরসি-(বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন) এবং ভিটিএসপিএবি-(ভেইক্যাল ট্র্যাকিং সার্ভিস প্রভাইডারস এ্যাসোসিয়েশন) এর লাইসেন্স আছে কিনা, ওয়ারেন্টি, ক্রয় পরবর্তী সেবা ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে।

লাইসেন্সপ্রাপ্ত ট্র্যাকিং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ‘প্রহরী’ই একমাত্র বাংলাদেশে তৈরী। তাই এর প্রতি আস্থাপোষণকারী গ্রাহকের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে সময়ের সাথে সাথে। ‘প্রহরী’ সম্পর্কে জানতে প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন।

    গাড়ির সুরক্ষায় প্রহরী সম্পর্কে জানতে

    Share your vote!


    এই লেখা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
    • Fascinated
    • Happy
    • Sad
    • Angry
    • Bored
    • Afraid

    মন্তব্যসমূহ

    Scroll to Top